কারাগারে বসেই ইয়াবা-গাঁজার রমরমা কারবার শীর্ষ সন্ত্রাসীর

তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ২১ মামলার আসামি হামকা বাহিনীর প্রধান নুরুল আলম চট্টগ্রাম কারাগারে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগৃহীত ইয়াবা এবং গাঁজা কারারক্ষীর মাধ্যমে নেওয়া হতো কারাগারের অভ্যন্তরে। গত শনিবার রাতে এক কারারক্ষীসহ চারজনকে আটকের পর বের হয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য। আটকদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবা এবং গাঁজা।

জানা গেছে, দেশে কারাগারে থাকা অর্ধেকই মাদক মামলার আসামি। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকার জন্য সৈনিকদের ইয়াবা ট্যাবলেট খাওয়ানো হতো। কিন্তু এখন ইয়াবা নেশা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। যারা ইয়াবা বিক্রি করে তারা জানে না যে এর ভয়াবহতা কত। একটানা তিন বছর ইয়াবা সেবন করলে মেধা আর থাকবে না। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাদক থেকে যুবশক্তিকে বাঁচাতে না পারলে আমাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। ইসলামেও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলা আছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশে কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার। কিন্তু বর্তমানে কারাগারগুলোতে ৯০ হাজারেরও বেশি আসামি রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকই মাদক মামলার আসামি। আমরা মাদক আইন সংশোধন করেছি, মাদক আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করেছি। সেগুলো আপনারা দেখেছেন। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করেছি। যারা মাদক ব্যবসা করে, তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও নানা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর কদমতলী ফ্লাইওভার থেকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী সাইফুল ইসলামকে। পরে তার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে লালদীঘি এলাকা থেকে গাঁজাসহ আজিজুল আলম জালালকে, বাটালী রোড এলাকা থেকে দিদারুল আলম মাসুম এবং আলো আক্তার নামে এক নারীকে আটক করা হয়।

মূলত কারাগারে নেয়ার জন্য মাসুমের কাছ থেকে ইয়াবা এবং আজিজুল আলম জালাল থেকে গাঁজা সংগ্রহ করেছিল কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম। আর আলো আক্তার ছিল এসব মাদকের মূল সরবরাহকারী।

সিএমপি কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন দেহ তল্লাশি করে সাইফুলের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায় এবং তার কাছে একটি আইডি কার্ড পাওয়া যায়। সে একজন কাররক্ষী।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দাগি আসামিদের জন্য নির্ধারিত স্থান ৩২ নম্বর সেলের বন্দি ও নুরুল আলম কারাগারে মাদক সেবনের পাশাপাশি নানাভাবে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

কারারক্ষী সাইফুলের মাধ্যমে একাধিকবার ইয়াবার চালান নেওয়া হয়েছে কারাগারের অভ্যন্তরে। ২১ মামলার আসামি হামকা বাহিনীর প্রধান নুরুল আলমকে কয়েক বছর আগে গ্রেফতার করেছিল পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

নুরুল আলমকে মাদক সরবরাহকারী আজিজুল আলম জালাল বলেন, কারারক্ষীর মাধ্যমে আসামি নূর আলমকে কারাগারের ভেতরে মাদক পাঠানো হতো।

মাদক উদ্ধারের ঘটনায় এস আই আবদুর রব বাদী হয়ে গ্রেফতার চারজন এবং কারাগারে থাকা নুরুল আলমকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছে। নুরুল আলমকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানাবে পুলিশ।