গভীর রাতে কলেজছাত্রীর ঘরে বন্ধু, অতঃপর…

এক কলেজে পড়ালেখার সুবাধে তারা পরস্পরের ‍সহপাঠী। সেই পরিচয়ে রাতের বেলায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সুযোগ বুঝে ধর্ষণ করতে গিয়ে ওই কিশোরীর বাড়ির লোকজনের হাতে পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়, পরে ওই কলেজছাত্রকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে দিকে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিতা কিশোরী স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত কলেজছাত্রের নাম সিয়াম (১৬)। সেও একই কলেজের ছাত্র।

এদিকে সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্ত কলেজছাত্রকে মুক্ত করা হয়েছে বলে সাইদুল ইসলাম নামে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কলকতি গ্রামের হামিদ প্রামানিকের ছেলে সিয়াম ওই ছাত্রীর সহপাঠী হওয়ায় তার এক বন্ধুসহ ওই ছাত্রীর বাসায় দেখা করতে যায়।

বন্ধু পরিচয় দিয়ে তারা বাসার একটি কক্ষে বসে কথা বলছিল এবং বাসার অন্যান্যরা নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে বাসার লোকজন ও প্রতিবেশীরা দৌড়ে এলে সিয়ামকে ধর্ষণের চেষ্টা করতে দেখে। এ সময় বখাটেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা সিয়ামকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

পুলিশ আহত অবস্থায় সিয়ামকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে এ ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের চাপে উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশ বসলে সিয়ামের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের দাবি জানায় ছাত্রীর পরিবার।

কিন্তু তাদের দাবি কর্ণপাত না করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে পৌর কাউন্সিলর বিষু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুকসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা ওই ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য হিসেবে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে সিয়ামকে মুক্ত করে দেয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি ও কাউন্সিলর এবং অন্যান্যরা মিলে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। এ টাকা মেয়ের নামে ব্যাংকে রেখে পরে বিয়ের কাজে লাগানো হবে।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষণের চেষ্টার সময় ওই কলেজছাত্রকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরো জানান, ওই ঘটনায় কেউ আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় তাকে রাতে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত করে দেয়া হয়। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।