ঘুমন্ত শিশুকে তুলে নিয়ে পানিতে ফেলে হত্যা!

গাজীপুরে নিখোঁজের ২০ দিন পর ফাহিম (৩) নামের এক শিশুর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে ফাহিমের লাশ উদ্ধার করা হয়।

স্ত্রীর অন্য সংসারের সন্তানকে মেনে নিতে না পারায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহতের সৎবাবা সোহাগ হোসেনকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে। সোহাগ হোসেনের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মাইজকান্দি এলাকায়।

কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান রাসেল জানান, চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মাইজকান্দি এলাকার সোহাগের সঙ্গে ফারজানার বিয়ে হয়। একপর্যায়ে ফারজানা সোহাগকে তালাক দিয়ে একই এলাকার ময়েজ উদ্দিনকে বিয়ে করেন। ফারজানার দ্বিতীয় সংসারে ফাহিমের জন্ম হয়। আর ময়েজ উদ্দিন চলে যান বিদেশে। বিদেশে থাকাবস্থায় ময়েজ উদ্দিনকে ছেড়ে প্রায় আড়াই বছর আগে সোহাগকে আবার বিয়ে করেন ফারজানা। সঙ্গে নেন সন্তান ফাহিমকে। এরপর তাঁরা গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্থানীয় লিজ ফ্যাশন গার্মেন্টসে চাকরি করেন ফারজানা।

এসআই রাসেল জানান, বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর অন্য সংসারের সন্তান ফাহিমকে মেনে নিতে পারেননি সোহাগ। এ নিয়ে ফারজানা-সোহাগের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গত ২৯ অক্টোবর ফাহিমকে নিয়ে সোহাগ নিখোঁজ হন। কারখানা থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে ফারজানা তাঁর সন্তান ও স্বামীকে না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে পুলিশ ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে সোহাগকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সোহাগ ফাহিমকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

সোহাগ পুলিশকে বলেন, ২৯ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে সোহাগ ঘুমন্ত শিশু ফাহিমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল এলাকায় সেতুর নিচে পানিতে ফেলে হত্যা করেন। সোহাগের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ফাহিমের গলিত লাশ ও কংকাল উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা ফারজানা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেছেন।