ফরম পূরণের টাকা পিয়নের পকেটে : পরীক্ষা দেওয়া হলো না ৫১ ছাত্রের

লক্ষ্মীপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স ও ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ৫১ ছাত্রের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হয়নি। তারা ফরম পূরণের জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খণ্ডকালীন কর্মচারী ওসমান গনির কাছে দিয়েছিল।

তিনি টাকা নিয়েও শিক্ষার্থীদের পূরণ করেননি। বুধবার ওই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারে। এ নিয়ে চরম ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে তারা।

বিষয়টি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান নুরুল আফসার চৌধুরীর কাছে অভিযোগ করা হয়। তিনি আগামী বছর পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করতে বলেন। এ নিয়ে প্রতারিতদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বুধবার ওসমান কলেজে আসেনি, তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে গাঢাকা দেওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায় নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ খণ্ডকালীন কর্মচারী ওসমান পরিচালচনা করেন। এ সুবাদে তিনি অক্টোবর ও নভেম্বরে অনার্স ও ডিগ্রি ২য় ও ৩য় বর্ষের নিয়মিত ও অনিয়মিতসহ ৫১ শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কথা বলে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন।

টাকা দেওয়া শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রবেশপত্র নিতে কলেজে আসেন। এসময় ওসমান তাদেরকে বুধবার (২৯ নভেম্বর) পরীক্ষা শুরুর আগে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে বলে জানান। সকালে তারা প্রবেশপত্র নিতে এসে প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এসময় তারা কলেজে ওসমানের দেখা পাননি। তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিব্বির আহমেদ ও নুরে আলম বলেন, ওসমান আমাদের বিভাগের প্রধান নুরুল আফসার চৌধুরীর খুব আস্থাভাজন কর্মচারী। তার নির্দেশে আমরা বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ৫১ শিক্ষার্থী ওসমানকে ফরম পূরণের জন্য প্রায় ২ লাখ টাকা দিয়েছি। তিনি ফরম পূরণ না করায় আমাদের কোন প্রবেশপত্রই আসেনি। প্রতারণার বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করা হবে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান নুরুল আফসার চৌধুরীর মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, ফরম পূরণে নগদ টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি আজকে আমি অবগত হয়েছি। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় একাডেমিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিভাগের সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।