ফিলিস্তিনি তরুণী রাজনের জানাজায় শোকাহত মানুষের ঢল

ইসরাইলি গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি নারী চিকিৎসাকর্মী রাজন আল নাজ্জারের জানাজায় শোকাহত মানুষের ঢল নেমেছিল। তার দাফনে হাজার হাজার মানুষকে অংশ নিতে দেখা গেছে।

শুক্রবার গাজায় বিক্ষোভে আহত এক ফিলিস্তিনির সাহায্যে এগিয়ে গেলে তাকেও গুলি করে হত্যা করেন ইসরাইলি স্নাইপাররা।

ইসরাইলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এ নিহতের ঘটনায় তদন্ত করবে।

ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটি এতদিন দাবি করে আসছে, যেসব বিক্ষোভকারী গাজা সীমান্তের বেষ্টনী ভেঙে ইসরাইলের ভেতরে প্রবেশ করতে চান, তাদেরই কেবল গুলি করছেন ইহুদিবাদী সেনারা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তারা বৈষম্যমূলক শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ তুলেছেন অবৈধ ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে।

ফিলিস্তিনি পতাকায় মোড়ানো আল নাজ্জারের মরদেহ যখন রাস্তা দিয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন সেই মিছিলে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন।

যেসব আহত বিক্ষোভকারী নাজ্জারের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তারাও এতে উপস্থিত ছিলেন।

নাজ্জারের রক্তমাখা মেডিকেল জ্যাকেটটি হাতে নিয়ে জানাজায় হাজির হন তার শোকগ্রস্ত বাবা। তাকে হত্যার ঘটনায় ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ঘোষণা দেন।

ফিলিস্তিনিদের মেডিকেল রিলিফ সোসাইটি জানিয়েছে, নাজ্জার খান ইউনিস শহরের কাছে আহত এক বিক্ষোভকারীর সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

সংস্থাটি জানিয়েছে, জেনেভা কনভেনশন অনুসারে চিকিৎসাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ।

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত নিকলয় ম্লেডেনভ এক টুইটার বার্তায় বলেন, শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ইসরাইলকে আরও সংযত হওয়া উচিত। হামাসেরও উচিত সীমান্তের ঘটনাবলি প্রতিরোধ করা।

দাফনের আগে শেষ বিদায়ের জন্য যখন আল নাজ্জারের মরদেহ তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন কান্নারত এক ফিলিস্তিনি বলেন, আমাদের প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে তোমার শাহাদতের মর্যাদা রক্ষা করব।

স্থানীয় অধিবাসীরা বলেন, বিক্ষোভের অঞ্চলগুলোতে রাজন খুবই পরিচিত একটা মুখ ছিল। ফিলিস্তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেবদূত হিসেবে আঁকা তার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।

গত ৩০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনিদের বসতবাড়িতে ফেরার বিক্ষোভে তাকে নিয়ে এ পর্যন্ত ১২৩ জন নিহত হয়েছেন।

নিকরয় ম্লাডেনভ বলেন, চিকিৎসাকর্মীরা হত্যার জন্য টার্গেট হতে পারে না।