বগুড়ায় ভুল অপারেশনে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে সাকিব হাসান (১৫) নামে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার রাতে শহরের শেরপুর সড়কে সাতানী বাড়ি সংলগ্ন ডলফিন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ স্বজন ও জনতা ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছেন। এর আগেই ক্লিনিক মালিক জন মণ্ডল, ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ একে পাল, নার্স ও অন্যরা গাঢাকা দেন।

নিহত স্কুলছাত্র সাকিব হাসান বগুড়া শহরের ফুলদীঘি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা পরিবহন শ্রমিক (কোচচালক) আবদুল আজিজ লিটনের ছেলে। সে ফয়জুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো।

জানা গেছে, সাকিব হাসান কিছুদিন ধরে পেটব্যথা অনুভব করছিল। তাকে ক্লিনিকে নিলে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, তার পেটে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে; অবিলম্বে তার অপারেশন করাতে হবে।

বাবা আবদুল আজিজ লিটন, মা পান্না আকতার জানান, বুধবার বিকালে সাকিবকে প্রথমে শহরের একটি স্বনামধন্য ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে অপারেশন ফি বেশি দাবি করায় প্রতিবেশির পরামর্শে শেরপুর সড়কে জন মণ্ডলের ডলফিন ক্লিনিক অ্যাড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয়।

আলোচনার পর কর্তৃপক্ষ অপারেশনের জন্য সাকিবকে ভর্তি করেন। রাত ৮টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। বগুড়া মিশন হাসপাতালের চিকিৎসক একে পাল অপারেশন করেন।

রাত পৌনে ৯টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে যখন বের করা হয়, তখন সাকিব অচেতন ছিল। কিছুক্ষণ পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা সাকিবকে শহরে কানুচগাড়ি এলাকায় তেসলা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেবার পরামর্শ দেন। সেখানে নেয়া হলে চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর সাকিবকে আবার ডলফিন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আনা হয়। বাবা-মায়ের অভিযোগ, চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে তাদের ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

তারা ছেলের হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। অবস্থা বেগতিক দেখে ক্লিনিক মালিক জন মণ্ডল, ডা. একে পাল, নার্স ও কর্মচারিরা পালিয়ে যান। ফোন বন্ধ রাখায় মালিক ও চিকিৎসকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনার পর সদর থানার ওসি (তদন্ত) কামরুজ্জামান মিয়া জানান, অপারেশনের পর স্কুলছাত্র সাকিব হাসানের মৃত্যু হলে স্বজন ও এলাকাবাসীরা হামলা চালিয়ে ক্লিনিকে ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এছাড়া লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, সাকিবের লাশের ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে। পরিবার থেকে কোনো মামলা দেয়া হয়নি। মামলা পেলে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।