বিকল্প দুধে শিশুর যে ক্ষতি হয়

শিশুর পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য অন্যতম উৎকৃষ্ট খাবার হচ্ছে বুকের দুধ। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোনকিছু দেওয়া ঠিক নয়। কুসংস্কার বা ভ্রান্ত ধারণার প্ররোচনায় পড়ে, বিশেষ করে চাকরিজীবী মায়েদের ক্ষেত্রে অফিস টাইমে বিকল্প দুধ খাওয়ানোর প্রচলন দেখা যায়। এই বিকল্প দুধের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানাচ্ছেন মো. মাইনুর রেজা

বিকল্প দুধ কী: বিকল্প দুধ বলতে মায়ের বুকের দুধ ছাড়া গরু, ছাগল বা অন্য যে কোন প্রাণীর দুধ, গুড়া দুধ, টিনজাত দুধ, প্যাকেটজাত দুধ ইত্যাদিকে বোঝায়।

গবেষণা: বিকল্প দুধ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য একদম ঠিক নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুড়া দুধ বা অন্যান্য অনেক দুধ বা যে কোন খাবারই সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত নয়। কারণ এতে এন্টারোব্যাকটার সাকাজ্যাকি এবং সালমোনিলা নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে। যা শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

রোগ প্রতিরোধ: বিকল্প দুধ খাওয়ালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং বিকল্প দুধে সঠিক পুষ্টি না থাকায় শিশু পুষ্টিহীনতায় ভোগে। ফলে শিশুর ঘন ঘন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, চর্মরোগ ইত্যাদি হয় এবং শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি: বিকল্প দুধ খাওয়ানোর জন্য যে বোতল, চুষণি, বোঁটা ব্যবহার করা হয়, তাতে বিসফেনল এ থাকে। যা শিশুর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

রোগজীবাণু: বিকল্প দুধে রোগজীবাণু বহন করার ভয় থাকে। বিশেষ করে গরমের সময় দুধসহ দুধের বোতল কিছুক্ষণ থাকলে খুব তাড়াতাড়ি রোগজীবাণু জন্মায়। যা শিশুর বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী।

শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত: ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়ক। বিশেষ করে ব্রেন, চোখ, ত্বক ইত্যাদি। কিন্তু বিকল্প দুধে তা না থাকায় শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এছাড়াও বিকল্প দুধে আয়রন থাকে না, ফলে শিশুর মানসিক ও বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশ বিঘ্নিত হয় এবং শিশু রক্তস্বল্পতায় ভোগে।

হজম সমস্যা: বিকল্প দুধ (গরুর দুধ) সহজে হজম হয় না। ফলে শিশু পেট ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে এবং বেশি কান্নাকাটি করে।

সুতরাং যেভাবেই হোক শিশু জন্মের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ নিশ্চিত করতে হবে। কোনভাবেই বিকল্প দুধ খাওয়ানো যাবে না। কেবল মায়ের বুকের দুধই শিশুর সুস্বাস্থ্য, সঠিক বৃদ্ধি, বুদ্ধিভিত্তিক বৃদ্ধি ঠিক রাখতে পারে।