আমি মুসলমান বলেই কি এমন আচরণ?

জার্মান ফুটবল দলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মেসুত ওজিল। রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানির ভরাডুবির পর অনেক উগ্রবাদী জার্মান সমর্থক তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এতোদিন এসব নিয়ে কথা না বললেও শেষপর্যন্ত সমালোচকদের একহাত নিয়েছেন ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের জার্মান নায়ক।

মূলত ঘটনার শুরু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের সঙ্গে ওজিলের সাক্ষাৎ নিয়ে। ওই ঘটনার জেরে জার্মানিতে ‘বর্ণবাদ এবং অসম্মানের’ শিকার হয়েছেন ওজিল। এই অভিযোগ তুলে তুর্কী বংশোদ্ভূত জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজিল আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার তিনি তার টুইটারে ওজিল লেখেন, ‘আমি তুরস্ক বংশোদ্ভূত তাই তুরস্কের প্রতি আমার ভালবাসা রয়েছে। আমার পিতা আমাকে শিখিয়েছেন, আমরা যেখান থেকে এসেছি, যেখানে আমাদের পরিবার বেড়ে উঠেছে এবং আমাদের স্মৃতি রয়েছে আমরা যেন তাকে ভুলে না যাই।’

ওজিল বর্তমানে জার্মানির নাগরিক। এ বিষয়টিকে তিনি ছোট করতে চান না। তিনি লিখেছেন, আমার দুইটি হৃদয়, এর একটি হচ্ছে তুরস্ক অন্যটি জার্মানি।

ওজিল লেখেন, ‘জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মেরকেল ২০১০ সালে এরদোগানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওই সময় বার্লিনে তুরস্ক ও জার্মানির মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি ফুটবল ম্যাচ এরদোগান ও মেরকেল একত্রে উপভোগ করেছিলেন। সে সময় এরদোগানের সঙ্গে ছবি প্রকাশের পর অনেকে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়েছেন, আমার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে অনেকে ইমেইল করেছেন এবং রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের শুরুতেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার জন্যে আমাকে দায়ী করেছেন।’

ওজিল আরো লেখেন, ‘আমরা যখন জিতি তখন আমি জার্মান, কিন্তু যখন হেরে যাই তখন একজন বিদেশি হয়ে যাই।’

তবে ওজিলের এই অভিযোগের জবাবে জার্মান ফুটবল প্রধানের কাছ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, জার্মানিতে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ তুর্কী বংশোদ্ভূত যা প্রায়ই দেশটির রাজনৈতিক বিতর্কে ইস্যু হয়ে উঠে। দেশটিতে অভিবাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে জার্মানিতে দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওজিল তার বিবৃতিতে প্রশ্ন তুলেছেন, জার্মান দলে তার মতো আরো অনেকেই আছেন যাদের সাথে জার্মানি ছাড়াও অন্য আরেকটি দেশের যোগাযোগ আছে, তাদের বেলাতে সেরকম আচরণ করা হয়নি কেন?

তিনি বলেন, ‘এটা কি একারণে যে দেশটি তুরস্ক? এটা কি একারণে যে আমি একজন মুসলমান? আমার মনে হয় এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আছে।’