আলোর মুখ দেখছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের জন্য রুশ ফেডারেশনের গ্লাভ কসমসের সঙ্গে সহযোগিতা স্মারক সই করেছে সরকার। এটাকে দেশের জন্য আরও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মহাকাশ বিষয়ক রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমসের সঙ্গে স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপণ বিষয়ে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আর্থ অবজারভেটরি ক্যাটাগরির এই স্যাটেলাইটটির নির্মাণের অভিযাত্রা শুরু হয়।

বিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সেন্ডার ভিকেনতেভিচ মান্তিতস্কি এবং অনলাইনে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান ও গ্লাভকসমসের মহাপরিচালক দিমিত্রি লস্কুতব উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ রাশিয়া সরকারের সহযোগিতায় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ৫জি যুগে প্রবেশ করেছে। আমরা তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ স্থাপনে ইতিমধ্যে কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, যা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের তৃতীয় অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ নির্মাণ করা। এই সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তার অভিযাত্রা আলোর মুখ দেখলো।

মন্ত্রী বলেন, টেলিকম প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এবং ইউপিইউ এর সদস্য পদ লাভ করে। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের আধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা করেন। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী গর্বিত দেশ হিসেবে তুলে ধরেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ নেন।

মোস্তাফা জব্বার এটাকে জাতীয় জীবনে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার অবদান গভীর ‍কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।

ড. শাহজাহান মাহমুদ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ সরকারের একটি অনন্য প্রয়াস।

বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বন্ধুপ্রতীম দুটি দেশের বিদ্যমান চমৎকার ঐতিহাসিক সম্পর্ক আগামী দিনগুলেোতে আরও সুসংহত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান।

গ্লাভকসমস মহাপরিচালক বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের জন্য তিনি আনন্দিত বলে উল্লেখ করেন।

বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং গ্লাভকসমসের মহাপরিচালক দিমিত্রি লস্কুতন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সহযোগিতা স্মারকে সই করেন।