উদ্বোধনের আগেই ভৈরব রেলওয়ে সেতুতে ফাটল

কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মধ্যে মেঘনা নদীতে নির্মাণাধীন ‘দ্বিতীয় ভৈরব রেলওয়ে সেতু’র কাজ প্রায় শেষ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিল সেতুটি।

কিন্তু নবনির্মিত দ্বিতীয় রেলওয়ে সেতুটি উদ্বোধনের আগেই ফাটল দেখা দিয়েছে। নদীতে ৮/৯/১০ নম্বরের তিনটি পিলারের সাইড ভেঙে গেছে।

এর মধ্যে ৯ নম্বর পিলারটিতে ফাটলের পরিমাণ বেশি দেখা যায়। কিভাবে সাইড ভেঙে পিলারে ফাটল দেখা দিল কেউ বলতে পারছেন না। অথচ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘটনার কিছুই জানেন না।

সেতুর প্রজেক্ট পরিচালক (পিডি) আবদুল হাই বুধবার এই প্রতিনিধির কাছ থেকে মোবাইল ফোনে এই খবর শুনে হতবাক হয়েছেন। এরপরই ভৈরব-আশুগঞ্জ এলাকায় কর্মরত প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের লোকজনের মধ্য তোলপাড় শুরু হয়।

কেউ কেউ বলছেন মেঘনা নদীতে চলাচলকারী কার্গো বা বড় জাহাজের ধাক্কায় পিলারের সাইড ভেঙে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ বলছেন সেতুর নির্মাণকাজ নিম্নমানের হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে জানতে সেতুর নির্মাণকাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক প্রকৌশলী জানান, কার্গো বা জাহাজের ধাক্কায় পিলারের সাইড ভেঙে গেলেও নিম্নমানের কাজের কারণে সেতুর পিলারে ফাটল সৃষ্টি হতে পারে। ঘটনাটি তদন্ত করলেই বুঝা যাবে ঠিক কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় ইরকন অ্যান্ড এফকনস কোম্পানি সেতুটির নির্মাণকাজ করেছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুর প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৫৬৭ কোটি টাকা।

এই রেলওয়ে সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯৮৪ মিটার এবং প্রস্থ্য হবে ৭ মিটার। নির্মিত সেতুতে ব্রডগেজ লাইন করা হয়েছে। ৩ বছরের প্রকল্পে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে প্রকল্পের মেয়াদ একাধিকবার বাড়িয়ে ৪ বছর করা হয়।

বর্তমানে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যই সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর কাজও শেষ হয়েছে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবনির্মিত সেতুটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

নবনির্মিত ভৈরব রেলওয়ের দ্বিতীয় সেতুর প্রজেক্ট পরিচালক (পিডি) ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল হাই জানান, পিলারে ফাটল আর ভাঙনের কথা আমি কিছুই জানি না। আপনার কাছ থেকে ঘটনাটি প্রথম শুনলাম। এখনই আমি খবর নিচ্ছি।