এইচএসসি পাস ‘ডাক্তার’, মাসে আয় তিন লাখ

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা তার। অথচ পরিচয় দেন পুরোদস্তর ডাক্তারের। এমনকি চিকিৎসা বিদ্যাতে তিনি ভর্তিও হননি। অথচ ডাক্তার হিসেবে তার মাসে আয় তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা।

তার নাম ওয়ালীর রেজা। কুষ্টিয়া কলেজ থেকে ২০০০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। আর গত চার বছর ধরে রাজধানীর রামপুরা পূর্ব হাজীপাড়া এলাকার যশোর মেডিসিন কর্নারে শিশু ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দিতেন।

এর আগেও দুই বছর রামপুরা ওয়াপদা রোড এলাকার ‘মেডিসিন কর্নারে’ রোগী দেখতেন ওয়ালীর। সব মিলিয়ে প্রতারণা চলেছে ছয় বছর। এই সময়ের মধ্যে কত শিশু বা অন্য রোগীর সর্বনাশ তিনি করেছেন, সেটা অবশ্য জানার সুযোগ নেই।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার রাতে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রামপুরার ‘যশোর মেডিসিন কর্নারে’ গিয়ে ওয়ালীরকে রোগী দেখা অবস্থায় খুঁজে পায়। সেখানে চ্যালেঞ্জ করলে প্রথমে অস্বীকার করে নিজেকে সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিসেবে দাবি করেন ওয়ালীর রেজা। পরে অবশ্য স্বীকার করেন অপরাধ।

আর এই গুরুতর অপরাধের পর দুই বছরের সাজা দিয়ে ওয়ালীরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম।

সারওয়ার আলম জানান, এইচএসসি পাস হলেও নিজেকে এমবিবিএস শেষ করে আরও উচ্চতর ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচয় দিতেন ওয়ালীর। এফসিপিএস ও এমডি করা আছে বলে বিজ্ঞাপন দিয়েই চিকিৎসার নামে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।

রোগী প্রতি তিনশ টাকা করে নিতেন ওয়ালীর। আর ইদানীং চিকিৎসকরা এর চেয়ে বেশি টাকা ফি নেন বলে তার কাছে রোগী আসত অনেক। প্রতিদিন ৩০ জনেরও বেশি রোগী দেখে কোনোদিন ১০ হাজার, কোনোদিন ১২ হাজার বা তার চেয়ে বেশি টাকা পকেটে ভরতেন ওয়ালীর। এই হিসেবে মাসে তার আয় ছিল তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা।

কীভাবে এবং কার মাধ্যমে তিনি এই পেশায় আসলেন, এমন প্রশ্নে র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, ‘ওয়ালীর রেজা নিজেই কিছু ওষুধের নাম শিখে নিজে এই পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন। কারণ এই পেশা তার কাছে সহজ মনে হয়েছিল।’