কাদের সামরিক শাসক কি না, জিজ্ঞাসা রিজভীর

ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সম্পাদকের পাশাপাশি সামরিক শাসকের দায়িত্ব পালন করছেন কি না তা জানতে চেয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার বিকালে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এই প্রশ্ন রাখেন।

রবিবার এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন তাহলে ঘরে করুন, অফিসে করুন, রাস্তায় কেন? জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন কেন?’

জবাবে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব কি আওয়ামী লীগের সম্পাদকের পাশাপাশি জোনাল সামরিক শাসকের দায়িত্ব পালন করছেন? কারণ গণতন্ত্রে তো এ ধরনের ভাষা নেই। এখন হাসিনাতন্ত্র চলছে বলেই গণতন্ত্রহীন ভাষা প্রয়োগ করতে পারছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা।’

‘জনসমাবেশ, প্রতিবাদ সভা, মিছিল করা ইত্যাদি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। মানুষের অধিকার পুলিশের বিধি-নিষেধের ওপর নির্ভর করে না। এ অধিকারগুলো মানুষের জন্মগত।’

‘পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক দেশে এমন নজির দেখাতে পারবে না যেখানে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হয়। শুধুমাত্র যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে কিংবা যেসব দেশে কুশাসন জারি আছে সেসব দেশে সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ থাকে। তাহলে বাংলাদেশে কেন বিএনপিসহ বিরোধী দলের সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন?’।

আওয়ামী লীগের ‘অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা’ কখনই টিকেনি দাবি করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনারও দুঃশাসনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত জনগণ মেনে নেয়নি নেবেও না।’

বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ‘জিঘাংসা চরিতার্থ করার’ এক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত বলেও মনে করে রিজভী। বলেন, ‘মামলাটি হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই জনমতের সাথে আদালতের দেয়া রায় খাপ খায়নি। দেশের জনসম্মতিতে বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ নির্দোষ।’

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের টাকায় সরকারি সফরে গিয়ে দেশে বিদেশে ভোট চাইছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রী করতে পারেন না, দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র থাকলে এটার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হতো।’

দেশে সুশাসন নেই বলে দুদক চেয়ারম্যানের মন্তব্য নিয়েও কথা বলেন রিজভী। বলেন, ‘অবৈধ ক্ষমতার জোরে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা অনিয়ম ও সর্বব্যাপী দুর্নীতির জন্য এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুদক সরকারের টিকিটিও ছুঁতে পারবে না।’

রবিবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পদে বড় ধরনের রদবদলের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সরকারের সহযোগী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন-দেশে আগাম নির্বাচন হতে পারে। গতকাল ২২ জন ডিসি ও ২৯ জন এসপি নিয়োগ ও বদলি করা হয়েছে। এটা আগাম নির্বাচনের আলামত কি না সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে।’

‘আপনারা নিজেদের মতো করে যতোই নির্বাচনী মাঠ সাজান না কেন তাতে কোনো কাজ হবে না। কারন বিএনপি ও বেগম জিয়া ছাড়া দেশে অংশগ্রহণমূলক কোন নির্বাচন হবে না, জনগণই এধরনের নির্বাচন হতে দেবে না।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে কেন্দ্র বিএনপির প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে অভিযোগ করে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।