কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ হল বন্ধের সিদ্ধান্তে ভোগান্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বাধ্য হয়েই হল ছাড়তে হচ্ছে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কুবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার পর ১ অক্টোবর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রেজা-ই-এলাহির গ্রুপ ক্যাম্পাসে অর্ধশত মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করে শোডাউন দেয় ও বাজি ফুটায়। এরপর তারা মহড়া শেষে চলে গেলে সদ্য সাবেক কমিটি (ইলিয়াস-মাজেদ) এর নেতাকর্মীরা দেশিয় অস্ত্র হাতে ক্যাম্পাসে পাল্টা মহড়া দেয়। এতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। আতঙ্কে পরে যায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

রবিবার (২ অক্টোবর) অনির্দিষ্টকালের জন্য হল সিলগালাসহ সকল শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।

জানা গেছে, মেয়েদের আবাসিক হল নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অবস্থানরত ছিলেন। সেখানকার ইংরেজি বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী রূম্পা রাণী দেবশর্মা নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ছুটির পর পরই মিডটার্ম পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট থাকায় এবং বাড়ি দূরে হওয়ায় এবার আর বাড়ি যাওয়ার কথা ছিলো না। তিনি বলেন, “আমি হুট করে বুঝতে পারছিলাম না এখন কী করবো কোথায় থাকবো৷ এলাকার দাদাদের খোজ নিয়ে বললাম যাবে কি না, তারা নিশ্চিত করায় এখন তাদের সাথেই বাড়ি যাচ্ছি৷”

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী অজয় চন্দ্র বর্মন বলেন, হঠাৎ হল ছাড়ার সিদ্ধান্তে টিউশনের টাকা না নিয়েই বাড়ি ফিরছি৷ দুই-তিন ঘন্টার ভেতর সিদ্ধান্ত নিয়ে টাকা ধার করে বৃষ্টির মধ্যেই রওনা দিতে হয়েছে। আবার, ১০ তারিখ ফিরতে হবে কিন্তু এসে কোথায় উঠবো, কই থাকবো জানিনা। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই ভুল। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে যারা এমন শোডাউন করে গেলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলা হয়েছে। আবার ১২ তারিখ আমাদের সেমিস্টার শুরু হওয়ার কথা সেটাও পিছিয়ে গেলো।

এছড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা টিউশনি টিকিয়ে রাখার জন্য বাধ্য হয়েই বন্ধ ক্যাম্পাসে হলে থাকছেন। কিন্তু এখন হল ছেড়ে দিয়ে বিপাকে পড়তে যাচ্ছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরা নিয়ে বিপাক বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হল প্রভোস্ট জিল্লুর রহমান বলেন, আমি দুপুরবেলা আমার হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিটিং এ বসেছি৷ কারো কোনো সমস্যা থাকলে আমাকে জানাতে বলেছি। যাদের বাড়ি ফিরতে সমস্যা হবে তাদের জন্য আমি ব্যবস্থা করে দিব। শিক্ষার্থী যারা রাতের বাসে যাবে তারা যাতে নিরাপদে যাচ্ছে সেটা আমি দেখছি। সকাল পর্যন্ত যারা যাবে তাদের সহযোগিতা দেওয়া হবে৷ রাতের খাবারও আমি মেয়েদের জন্য ব্যাবস্থা করে দিয়েছি যাতে বাইরে গিয়ে খাবার না আনতে হয়৷

উল্লেখ্য, ছাত্র হলসমূহে অবস্থানকারী ছাত্রদের ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ছাত্রী হলসমূহে অবস্থানকারী ছাত্রীদের আগামী ৩ অক্টোবর সকাল ৯ টার মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ রয়েছে।