খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার প্রত্যাহার চায় স্থানীয়রা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার প্রত্যাহার চায় স্থানীয় এলাকাবাসীরা। মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম—দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে হাসপাতালেটিকে ৫০শয্যায় উন্নিত করার দাবি জানানো হয়।

রোববার (২০শে আগষ্ট) সকালের দিকে সর্ববস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মাটিরাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। মাটিরাঙ্গার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো: সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আলী হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন রুবেল, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি মো: রবিউল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মাটিরাঙ্গা পৌর আহ্বায়ক ওসমান চিশতী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ডা: খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে গত ১যুগ ধরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে দ্রুুত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষায় হাসপাতাল চত্বরে রোপিত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ২১টি দেবদারু গাছ কাটাসহ দীর্ঘ একযুগ ধরে দায়িত্বে থাকা ডা: খায়রুল আলম বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে হাসপাতালটিকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তার এহেন অনিয়মে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী। একক আধিপত্য বিস্তার করে নিজের মতো করে হাসপাতাল পরিচালনা করছেন তিনি। তার অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে ডাক্তার, স্টাফ, নার্স কেউ এখানে টিকে থাকতে পারে না।

বক্তারা আরো বলেন, সম্প্রতি মাটিরাঙ্গা উপজেলাকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ হাসপাতালটি ডেঙ্গু উৎপাদনের কারখানা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ময়লা আবর্জনার এক নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালটি, হাসপাতালে আসা রোগীদের ওয়ার্ড গুলো দুর্গন্ধে ভরা। বর্হিবিভাগ ও রোগীদের ব্যাবহ্রত শৌচাগার অনেক আগেই ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে গেছে। ডাস্টবিন গুলোতে উপচে পড়া ময়লার স্তুুপ। কুকুর বিড়াল দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা নিয়ে লুকোচুরি খেলছে। তাছাড়া হাসপাতাল চত্বরে পরিষ্কার—পরিচ্ছন্নতার কাজগুলো দায়সারাভাবে সেরেছেন পরিচ্ছন্নকর্মীরা।

জনবল সংকটের অজুহাত ও নানান জটিলতায় হাসপাতাল চত্বরে ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে উঠলেও এদিকে দৃষ্টি পড়ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তাছাড়া জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আশু সমাধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি ডা. খায়রুল আলম।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: খায়রুল আলমের সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সরকারি নিয়ম বিধি মেনে চলতে হয়। অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াত। কিছু সংখ্যক লোক টেন্ডার বাজি বা কোটেশন সুযোগ না পাওয়ায় এ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এমনিতে জনবল সংকটে রোগীদের সামাল দিতে হিমশীম খেতে হচ্ছে।

মানববন্ধন শেষে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তীর মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।