গাইবান্ধায় বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক, চলছে ঝাড়া ও সিদ্ধ’র কাজও

গাইবান্ধায় বোরো ধান কাটার ধুম লেগেছে। ধান কাটা ও মাড়াই চলছে পুরোদমে। আবার ধান সিদ্ধ করে শুকিয়ে চালে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াও চলমান।

বিভিন্ন এলাকার মাঠের সোনালি ধান এখন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। চলতি বছর বোরো চাষে প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে জেলার কৃষকদের। কিন্তু বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্বিঘ্নে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কিষান-কৃষানিরা। মাঠজুড়ে সোনালি ধানের ম–ম গন্ধে মনের আনন্দে কাজ করছেন তাঁরা। কথা বলার মতো যেন ফুরসত নেই তাঁদের।

কৃষক ধান কেটে আঁটি বেঁধে কেউ মাথায় করে, আবার কেউ পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। ফসলি মাঠেই কিংবা বাড়ির উঠানে চলছে ধানমাড়াইয়ের কাজ। এসব ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা, তেমনি আনন্দও লক্ষ করা যাচ্ছে। ধান সিদ্ধ করার কাজও চলছে পুরোদমে। অনেকে আবার ধান সিদ্ধ করে শুকিয়ে ধান মাড়াই করে চালও তৈরি করে ফেলেছেন।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, আগে পেকে উঠা ব্রি-২৮ জাতের ধান কৃষকেরা কাটছে। এছাড়া দু’একটি মাঠে ব্রি-২৯, ব্রি ধান ৮১ ও জিরাশাইল জাতের পাকা ধান কাটা হচ্ছে।

পলশাবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের আজরার বিলে দেখা যায় কৃষক আতোয়ার, মঞ্জুর মিয়াসহ আরো বেশ ক’জন কৃষক ব্রি-২৮ জাতের ধান কাটছেন। এদের একজন জানান একদিন আগে কাটা এ জাতের ধানের আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ১৫-২০ মণ হারে ধান হয়েছে। এছাড়া আরো কটি এলাকার কৃষকেরা বেশ ভালো হারে ফলন পাচ্ছেন বলে জানান।

এদিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় নেক ব্লাস্ট সহ বিভিন্ন রোগে কম হারে ফলন মিলছে। গত ৪ এপ্রিল কালো বৈশাখী ঝড়ের সময় হিট শকে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ধান পুড়ে যাওয়ায় ঐসব জমিতে ভালো ফলন হয়নি বলে জানান কৃষকেরা।

মৌসুমের শুরুতেই ধানের দাম নিয়ে খুশি কৃষকরা। পুরোপুরি শুকনো একমণ ধান এক হাজার আশি থেকে সাড়ে এগারোশ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলায় এবছর ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।