গাইবান্ধার বাসিন্দা বাবা-ছেলে এবার হাঁটবেন তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ

গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা সাদেক আলী সরদার (৬৭) ও তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৭)। ইতোমধ্যে তারা ১৬২৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে দেশ ভ্রমণে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারও হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় আগামী রোববার (২০ নভেম্বর) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে কক্সবাজার টেকনাফ-ছেঁড়াদ্বীপ পর্যন্ত হেঁটে যাত্রা করবেন এই বাবা ও ছেলে।

‘আলোকিত বাংলার স্বপ্নযাত্রা, আমরা করবো জয়’ এই শ্লোগানে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১০১৫ কিলোমিটার মহাসড়কে হেঁটে রওনা দেবেন তারা। দীর্ঘ পথের এই যাত্রাটি সফল হলে তাদের হাঁটার অংক দাঁড়াবে ২৬৩৯ কিলোমিটার।

এরআগে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গাইবান্ধা সাদেক চত্বর থেকে স্থানীয় ফুলছড়ি থানা চত্বর পর্যন্ত প্রথম পথ হাঁটাচলা শুরু করেন। এখানে প্রাথমিকভাবে ২৮ কিলোমিটার হাঁটছেন তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর-ঘোড়াঘাট-হিলি ও পঞ্চগড়-বাংলান্ধাসহ আরো বেশ কিছু স্থানে পদার্পণ করে। ওইসব স্থানগুলোতে তারা দেখছেন দেশের নানা ইতিহাস-ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থানসমূহ। সম্প্রতি গাইবান্ধা থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত টানা ২২৬ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়াসহ সিলেট থেকে জাফলং পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। এভাবে ৪৯তম মিশন পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন ১ হাজার ৬২৪ কিলোমিটার। এরপর ৫০তম মিশনে হাঁটবেন ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক। এতে প্রায় ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানান ভ্রমণকারী বাবা ও ছেলে।

জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা সাদেক আলী সরদার চাকরি করছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ইতিমধ্যে ২০০৬ সালে অবসর গ্রহণ করেছেন। এখানে চাকরি করার সুবাদে হেঁটে শরীর চর্চার অভ্যাসটুকু রয়েছে তার। এ থেকে স্বপ্ন দেখেন বিশাল লম্বা পথ হেঁটে পাড়ি দিবেন দেশান্তরে। সেই জায়গায় যাওয়ার আগেই শুরু করছেন হেঁটে চলার অনুশীলন। সফরসঙ্গী হিসেবে যোগ দিয়েছেন তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান।

ভ্রমণসঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাবার স্বপ্নপূরণে আমিও সঙ্গী হয়েছি তার। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করে নানা ধরণের অভিজ্ঞতা অর্জনও হচ্ছে। সেটি দেশ ও দশের স্বার্থে কাজে লাগাবো। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে তেঁতুলিয়া-টেকনাফের পদযাত্রা যেন আমাদের সফল হয়, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।

হেঁটে দেশ ভ্রমণের অন্যতম ব্যক্তি সাদেক আলী সরদার জানান, শুধু তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ নয়, আরো লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। তাই পা-গুলোকে বাহন হিসেবে হেঁটে চলা শুরু করা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এক সময় চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে শরীরে নানা রোগে বাসা বেঁধেছিল। এরই মধ্যে কয়েক দফায় দীর্ঘপথ হাঁটাচলা করে অনেকটাই সুস্থ আছি। যেন শরীরের শক্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। এমন চর্চা সবার দরকার বলে মনে করি।