গায়ে জড়ানো ২০ কেজি ওজনের শিকল ও পাঁচটি তালাসহ মৃত্যু, সেভাবেই দাফন

গায়ে জড়ানো ২০ কেজি ওজনের শিকল ও পাঁচটি তালাসহ দাফন করা হয়েছে রাজশাহীর বাঘার জহুরুল ইসলাম মণ্ডল (৩৪) নামে এক পীরভক্তকে।

তার পরিবার জানায়, পীরের কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে গায়ে পড়েছিলেন ২০ কেজি ওজনের শিকল। গায়ে জড়ানো সেই শিকলে ছিল পাঁচটি তালা। এমন বেশভূষায় গত মঙ্গলবার যশোর সীমান্ত দিয়ে আজমির শরীরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন জহুরুল।

যশোরের শার্শা উপজেলার ইছামতি নদীতে ভেলায় চড়ে আজমিরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জহুরুল। কিন্তু ভেলা থেকে পড়ে যাওয়ায় ২০ কেজি ওজনের শিকলসহ পানিতে ডুবে মারা যান পীরভক্ত জহুরুল।

গত শুক্রবার শার্শা থানা পুলিশ বাঘা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন করে।

নিহত জহুরুল ইসলাম মণ্ডল বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের ফজল মণ্ডলের ছেলে। শনিবার বাদ আসর জহুরুল ইসলাম মণ্ডলের মরদেহ চেইন ও তালাসহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রাশিদা বেগম জানান, আমার স্বামী আজমির শরিফে যাওয়ার কথা বলে লোহার তৈরি শিকল শরীরে পরে বাড়ি থেকে বের হয়। সেই চেইনে পাঁচটি তালা লাগানো ছিল। লোহার সেই চেইনটির ওজন ছিল প্রায় ২০ কেজি। এর আগে লোহার চেইন ব্যবহার করেনি। বছরখানেক আগে যশোরে কাজে গিয়ে একজন পীরের কাছে বায়াত গ্রহণ করেন। তার পর থেকে লোহার চেইন ব্যবহার করতে শুরু করে।

জহুরুলের ভাই আমিরুল ইসলাম বলেন, ভাইয়ের মরদেহটি শার্শার ইছামতি নদীতে ভাসতে দেখে স্থানীয় পুলিশকে খবর দেন নদীপাড়ের মানুষ। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তার কাছে থাকা ব্যাগের ভেতরে পরিচয়পত্র পায়। সেই পরিচয়পত্রে নাম ঠিকানা দেখে বাঘা থানায় খবর দেন। পুলিশ বিষয়টি বাঘার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে জানায়। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমরা খবর পেয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন করি।

জহুরুল ইসলামের আরেক ভাই সেন্টু আলী জানান, দাফনের আগে তার গায়ে লাগানো সেই চেইনের তালা খোলা সম্ভব হয়নি। গায়ে লাগানো চেইনে পাঁচটি তালাসহ তাকে দাফন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল করিম জানান, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। মৃত্যুও স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে। এ জন্য পুলিশ এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফন করা হয়েছে।