চট্টগ্রামে মেয়রের বাড়িতে হাঁটু পানি, এখনও ডুবে আছে পুরো নগর

চট্টগ্রামে টানা বর্ষণে নগরের অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে আছে এখনও। তা নিরসনে প্রশাসনের তেমন কোনো উদ্যোগও নেই। এমনকি পানি প্রবেশ করেছে সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িসহ নগরের হাজার হাজার বাসা-বাড়িতে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলায় জমেছে হাঁটুপানি।

রোববার রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টি এবং ভারী বর্ষণে নগরের অনেক এলাকায় কোমর সমান জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

নগরের বহদ্দাহাট এলাকায় অবস্থিত সিটি করপোরেশনের মেয়র বাড়ির উঠানে হাঁটু পরিমাণ পানি জমেছে। সেখানে রাখা যানবাহনের চাকার নিম্নাংশ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। শুক্রবার রাতের বৃষ্টিতেও মেয়রের বাড়িতে পানি প্রবেশ করে। রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত পানি থাকে মেয়রের বাড়িসহ আশপাশের এলাকায়।

শনিবার শেষ রাত থেকে পানি কমলেও রোববার বিকালে আবারও পানি ঢোকে। আজ (সোমবার) সকাল ছয়টার পর থেকে বৃষ্টি না হলেও মেয়রের বাসার সামনে জমে থাকা পানি চার ঘণ্টায়ও নেমে যায়নি।

মেয়রের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের নিচতলায় থাকা বৈঠক ও খাবার ঘরে পানি রয়েছে। বাসার সামনে রাখা মেয়রের গাড়ির চাকা পানির নিয়ে তলিয়ে গেছে। পানির কারণে এখন মেয়র দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকছেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির দুই নিরাপত্তাকর্মী।

নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলায়ও হাঁটু পানি জমে আছে। এতে নিচতলার চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রোগীকে নীচতলা থেকে ওপরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. নুরুল হক।

তিনি জানান, হাসপাতাল এলাকা নিচু এলাকায় হওয়াতে বৃষ্টি বেশি হলে পানি ঢোকে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যহত হয়।

এদিকে, নগরীর বাকলিয়া, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ছোটপুল, বড়পোল, আগ্রাবাদ ব্যাপারীপাড়া, মহুরিপাড়া, সিডিএ আবাসিক, আতুরার ডিপো, চকবাজার, বায়েজিদ, ইপিজেড, পতেঙ্গার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অনেক বাসা-বাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে। এ কারণে এসব এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নগরীর বিভিন্ন সড়কে জমেছে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। জলাবদ্ধতার কারণে নগরের বিভিন্ন সড়কে আটকা পড়েছে যানবাহন। সৃষ্টি হয়েছে চরম যানজটের। বিশেষ করে নগরের মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, বহদ্দারহাট বাদুরতলা, ইপিজেড, পতেঙ্গা ও আগ্রাবাদ, হালিশহর, আকবরশাহ ও বাকলিয়া থানা এলাকার বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপরও পানি জমে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমেছে বলে জানা গেছে।

নগরের পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলায় ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রাউজান উপজেলায় হাফেজ বজলুর রহমান সড়কের কদলপুর এলাকায় ধসে গেছে বলে জানিয়েছেন আতিকুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাঁটু সমান পানি জমেছে। একই অবস্থা রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলায়।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত (২৪ ঘণ্টায়) চট্টগ্রামে ১৪৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।