চাঁদপুরে প্রেম করতে ফ্লাটে ডেকে প্রতারনা করতেন তরুনীরা; গ্রেফতার-৬

ফোনালাপে প্রেমময় সুমধুর কন্ঠস্বরে পুরুষদের কুপতকাঁত করে ঘনিষ্ঠ সময় কাঁটাতে ফ্লাটে ডেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ৪ নারী ও তাদের ২ পুরুষ সহযোগীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১১ মে) এ ব্যপারে প্রেস ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধা সরকার।

তিনি জানান, ‘গ্রেফতারকৃত ওই নারীরা ফোনালাপে পুরুষদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে একান্ত ঘনিষ্ঠ কাটানোর জন্য তাদের ফ্লাটে ডেকে নিতেন। এরপর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মোটাদাগে টাকা আদায় করতেন। এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুজন কান্তি বড়ুয়া জানান, ‘আসামীরা হলেন তাসলিম আক্তার জেরিন (২০), সাদিয়া বেগম (২৭), হাসিনা বেগম প্রকাশ মুন্নি (৩৫), মোস্তফা (৪৫), কাজল খান (২২), আয়েশা আক্তার নিপা (১৯)। যারা দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন লোকজনদেরকে ফোনালাপসহ নানা কৌশলে বাসায় ডেকে নিয়ে অশ্লীল ছবি ধারণ করে অবৈধভাবে টাকা আদায় করতো। এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা নং-মামলা নং- ২৩। পেনাল কোড ধারা- ৩৪২/ ৩২৩/ ৩৮৫/ ৩৮৬/ ১০৯/ ৩৪।’

অভিযোগকারী এক ভুক্তভোগী জানান, ‘আমাকে শহরে তাদের আলিমপাড়াস্থ ভাড়া বাসায় একটি নষ্ট ফ্রিজ ঠিক করতে ডেকে নিয়েছিলো। পরে আমাকে বার বার পানি পান করতে বললে আমি রোজা আছি জানাই। এরপর বাহির থেকে আরও কয়েকজন এসে আমার গায়ের শার্ট ও কোমরের বেল্ট খুলে নেয়। পরে জেরিন নামের মেয়েটি আমাকে হুমকি দেয় আমি তার সাথে খারাপ কাজ করেছি। সেজন্য তাদের টিমকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। নতুবা তাদের মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও আমার স্ত্রীর নিকট পাঠিয়ে পরিবারের অশান্তি সৃষ্টি করবে। আমি অনেক অনুরোধ করলেও ওরা আমাকে টাকা ছাড়া ছাড়বে না বলে জানায় এবং আমাকে গালাগাল দিয়ে চড় থাপ্পর মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমি নিরুপায় হয়ে এদের ভয়ে তাদের দাবীকৃত চাঁদা বাবদ আমার প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা জেরিনের হাতে দেই। পরে ওরা আমাকে লাথি মেরে ঘর থেকে বের করে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে আমি সাহায্য পেতে আইনের শরণাপন্ন হই।’

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি আবদুর রশীদ বলেন, ‘আসামীদের মধ্যে নারীগুলো খুবই ধূর্ত। এরা পুরুষদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অসৎ উদ্দেশ্যে বাসায় ডেকে নিতো। এরপর এদের পুরুষ সহযোগীদের সাহায্যে মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি তুলে ব্লাকমেলিংয়ের মাধ্যমে ফ্লাটে ডেকে নেওয়া সাধারণ পুরুষদের সাথে প্রতারনা করে মোটা দাগে টাকা হাতিয়ে নিতো। ইতোমধ্যে আসামীদেরকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’