বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিম ইকবাল

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ শুরুর দিন তামিম ইকবাল বড় খবর দিলেন। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন দেশসেরা এ ওপেনার। বুধবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তার মাধ্যমে এ ঘোষণা দিয়েছেন তামিম।

২০১৮ সালের পর থেকে গত পৌনে তিন বছরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মূলত এ কারণেই তিনি নিজেকে বিশ্বকাপ দল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তবে এখনই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেননি তামিম।

ভিডিওবার্তায় তামিম বলেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আশা করি সবাই ভালো আছেন। ছোট একটা ঘোষণা ছিল। কিছুক্ষণ আগে আমাদের বোর্ড প্রেসিডেন্ট (নাজমুল হাসান) পাপন ভাই ও প্রধান নির্বাচক (মিনহাজুল আবেদিন) নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, কিছু জিনিস শেয়ার করেছি। সেটা আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।’

‘বিষয়টা হলো, আমি উনাদেরকে বলেছি যে, আমার মনে হয় না যে আমি বিশ্বকাপ দলে থাকা উচিত। তাই বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। এটার দুই-তিনটি কারণ আছে। আমার কাছে মনে হয় যে, গেম টাইম একটা বড় কারণ। আমি বেশ কয়েকদিন ধরে খেলছি না এই ফরম্যাটটা।’

‘দ্বিতীয়ত, ইনজুরি। তবে ইনজুরি আমার মনে হয় না অত বড় সমস্যা। কারণ আমি আশা করি, বিশ্বকাপের আগেই ঠিক হয়ে যাবো। তবে মূল যে বিষয়টা আমাকে ভাবিয়েছে, তা হলো… যেহেতু আমি সবশেষ ১৫-১৬টা টি-টোয়েন্টি খেলিনি এবং আমার জায়গায় যারা খেলছিল, আমার কাছে মনে হয় না, এটা তাদের প্রতি ন্যায়বিচার হতো, যদি আমি হঠাৎ করে এসে ওদের জায়গা নিয়ে নেই।’

‘আমি জানি না, হয়তোবা আমি বিশ্বকাপের দলে থাকতাম। কিন্তু আমার মনে হয় না, এটা ফেয়ার হতো। তাই আমি প্রেসিডেন্ট এবং নির্বাচকের কাছে আমার বার্তাটা পৌঁছে দিয়েছি। তো এটাই। সম্ভবত এই বিশ্বকাপে আপনারা আমাকে দেখবেন না। আমি এতটুকুই বলতে পারি, দলের জন্য সবসময় শুভকামনা।’

‘আরেকবার পরিষ্কার করে দেই, আমি অবসর নিচ্ছি না। কিন্তু সম্ভবত এই বিশ্বকাপটা আমার খেলা হবে না। আমার কাছে মনে হয় যে, এটাই যথাযথ সিদ্ধান্ত। তরুণ যারা এখন জাতীয় দলে ওপেন করছে, ওদের সুযোগ পাওয়া উচিত। কারণ তারা শেষ ১৫-১৬ ম্যাচ ধরে খেলছে। ওদের প্রস্তুতিও আমার চেয়ে ভালো হবে। পাশাপাশি আমি এটাও মনে করি, তারা দলকে আমার চেয়ে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।’

এসময় সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি অনুরোধ করেন কোনো ধরনের ফোন কল অথবা মেসেজ না দিতে। এ সিদ্ধান্ত তিনি পাকাপাকিভাবেই নিয়েছেন এবং এতেই অটল থাকবেন। তাই তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া না করার আহ্বান জানিয়েছেন তামিম।

উল্লেখ্য, সবশেষ ২০২০ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তামিম। এরপর কখনও ইনজুরি আবার কখনও ব্যক্তিগত কারণেই সরে দাঁড়িয়েছেন এই ফরম্যাট থেকে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ ১১টি কুড়ি ওভারের ম্যাচ খেলা হয়নি তার।

বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পাঁচ ম্যাচসহ বিশ্বকাপের আগে মোট ১৬ ম্যাচ বাইরে থাকতে হচ্ছে তাকে। এ কারণেই মূলত হুট করে বিশ্বকাপের দলে নিজেকে দেখতে চান না দেশসেরা এ ওপেনার। তরুণদের প্রতি আস্থা রেখে নিজেকে বিশ্বকাপ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।