উন্নয়নশীল দেশের তকমা

তিন সূচকের যোগ্যতা নিয়ে বাংলাদেশই প্রথম

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশ। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে যে শর্ত দরকার, তা পূরণ করায় আবেদন করার যোগ্য হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা বাংলাদেশের সামনে নতুন সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি করবে।

তবে এর জন্য বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জেুর মুখেও পড়তে হবে। কী সেই চ্যালেঞ্জ? এ বিষয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।

তিনি বলছেন, ‘উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি একটা মর্যাদার বিষয়। বাংলাদেশকে সবাই তখন আলাদাভাবে বিচার করবে। এর আগে বহু দেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের যোগ্য বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এ তিনটি সূচকেই যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ, যা এর আগে অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে ঘটেনি। তবে উন্নয়নশীল দেশ হলে বাংলাদেশ এলডিসি হিসেবে বাণিজ্যে যে অগ্রাধিকার পায় তার সবটুকু পাবে না। আবার বৈদেশিক অনুদান, সুদের ঋণও কমে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ আঞ্চলিক বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে বিভিন্ন দেশে জিএসপি বা শুল্কমুক্ত পণ্য রফতানি সুবিধা পায়। এর সঙ্গে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) আওতায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অনেক দেশ আমাদের শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। আবার এলডিসি হিসেবে ওষুধ রফতানির ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিবিধান থেকে আমাদের অব্যাহতি রয়েছে।অ উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে কম সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে। এলডিসি না থাকলে তখন সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে কি সেটা একটা প্রশ্ন। যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন যে জিএসপি দেয়, তা ২০২৭ সাল পর্যন্ত থাকবে। এরপর জিএসপি প্লাস পাওয়ার কথা রয়েছে৷’

ড. জাহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। মাথাপিছু আয়ের বিবেচনায় এ শ্রেণিকরণ করে বিশ্বব্যাংক। জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল এবং উন্নত- এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে এলডিসি পর্যায়ে রয়েছে।