ধস নেমেছে হোটেল রেইন ট্রির ব্যবসায়

রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধস নেমেছে হোটেল দ্য রেইন ট্রির ব্যবসায়। এমনটাই জানিয়েছেন হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ঝালকাঠির সংসদ সদস্য বিএইচ হারুনের বড় ছেলে আদনান হারুন। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি এ তথ্য দেন। থ্রি স্টার এই হোটেল কক্ষেকেই ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ওই দুই তরুণী।

আদনান হারুন বলেন, ‘এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হোটেলের ব্যবসা ধ্বংসের মুখে পতিত হতে চলেছে। কারণ গত এক সপ্তাহ ধরে হোটেলে কোনও অতিথি আসেননি। এমনকি আগামী দুই সপ্তাহে যারা হোটেল বুকিং দিয়েছিলেন সবাই তা বাতিল করেছেন। আর হোটেলে অবস্থানরত অতিথিরাও চলে গেছেন। রেইন ট্রি হোটেল সাফাত-নাঈম চক্রের অপরাধের সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত।’

তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের সহযোগিতা করার জন্য ঘটনার দিনের সিসিটিভির ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর সত্য নয়। এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। যা হোটেলের সুনাম ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে এবং হোটেলকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে এমডি বলেন, ‘দেশজুড়ে আলোচিত এ ঘটনার বিচার চাই আমরা, বেরিয়ে আসুক প্রকৃত ঘটনা।’

তবে আদনান হারুন এও বলেন, ‘হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ফ্রাংক ফরগেট ঘটনারদিন রাতে সস্ত্রীক হোটেলেই অবস্থান করছিলেন। ওই রাতে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেননি। অবশ্য হোটেলের রুমগুলো সাউন্ড প্রুফ হওয়ায় কক্ষের ভেতর কোনও অপরাধ হলে কর্মচারীদের পক্ষে বাইরে থেকে বোঝার কোনও সুযোগ নেই। সুতরাং হোটেলের ৭০০ ও ৭০১ নম্বর কক্ষে ভিকটিমদের সঙ্গে এ ধরনের অপরাধ ঘটেছে কিনা সেটা আদালতে প্রমাণিত হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটা তদন্ত করছে, যা প্রক্রিয়াধীন।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত হোটেলের পরিচালক মাহিন হারুন এবং ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাতের বন্ধুত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসামি সাফাত একদিনই এ হোটেলে এসেছিলেন এবং রাতযাপন করেছিলেন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মাহিন হারুন কেক নিয়ে গেছে বলে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, তাতে মাহিন হারুনের ব্যক্তিগত কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।’

এদিকে গত ২৮ মার্চ দ্য রেইন ট্রি হোটেলে সাফাত আহমেদের জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়েই বন্ধুদের যোগসাজশে ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই ছাত্রী। তবে ওই ঘটনায় ৪০ দিন পর অর্থাৎ ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিরা হচ্ছেন- সাদনান সাকিফ, সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী।

অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে। গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী রহমত আলী আজাদকেও।