পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যু!

পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসাপাতালের চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসা ও সেবিকাদের খামখেয়ালী পনায় নবজাতকসহ রুনা বেগম (২০) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার সকালে ওই প্রসুতির মৃত্যু হয়।

মৃত রুনা উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের জসিমের স্ত্রী।

মৃত রুনার স্বামী ও স্বজনরা জানান, ‘শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় রুনা প্রসব বেদনায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় দায়িত্বরত সেবিকারা ওই প্রসুতির নিন্মাঙ্গের পাশ কেটে বাচ্চা প্রসব করানোর চেষ্টা চালায়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রুনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক জুনায়েদ খান লেলিনের ব্যক্তি মালিকানাধীন কলাপাড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে রুনাকে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতেই রুনার সিজার করেন ডাক্তার লেলিন। পরদিন শনিবার (২৬জুন) সকালে নবজাতক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওই দিনই নবজাতকের মৃত্যু হয়।’

‘এদিকে পেটে ফুলাসহ শ্বাসকস্ট বেড়ে যাওয়ায় রবিবার (২৭ জুন) রাত ৮টার দিকে ডাক্তার লেলিনের ভাড়া করা গাড়িতে করে প্রসূতি রুনাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সোমবার (২৮জুন) ভোররাতে সেখানে রুনার মৃত্যু হয়।’

রুনার স্বামীর অভিযোগ, ‘মৃত্যুর আগে কলাপাড়া হাসপাতালে রুনা যন্ত্রনাসিক্ত হয়ে চিৎকার করলে দায়িত্বরত সেবিকারা তাকে চর থাপ্পর মারে।’

স্বজনদের অভিযোগ, ‘সিজারের পর নবজাতকের মাথায় কেটে যাওয়ার ক্ষত ছিল। এছাড়া সিজারের পর সেলাই না করে কসটেপ দিয়ে প্রসূতির কাটা স্থান আটকে দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এমনকি অস্ত্রপাচারের আগে রুনার কোন ধরনের আলট্রাসোনোগ্রাম কিংবা পরীক্ষা করেননি কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা।’

এদিকে, হাসপাতালে সিজিারিয়ান ব্যবস্থা থাকা সত্যেও কেনো প্রসুতিকে ব্যক্তিগত ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এমন ক্ষোভ নিয়ে ফুসে উঠেছে স্থানীরা।

এবিষয়ে জানাতে চাইলে কলাপাড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের সেবিকা আলো বেগম জানান, নিন্মাঙ্গ কাটা অবস্থায় আমাদের ক্লিনিকে রোগী নিয়ে আসা হয়েছে। তখন প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো। এখানে তিন ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসার ব্যাপারে ডা. লেলিন ছাড়া তিনি কিছু বলতে পারবেন না।’

এ বিষয়ে ডা. জুনায়েদ হোসেন খান লেলিনের কাছে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এছাড়া তার চেম্বারে গেলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিনময় হালদার জানান, ‘বিষয়টি মাত্র কিছুক্ষন আগে জেনেছি। এর সাথে কারা সংশ্লিষ্ট তা জেনে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’