পাবনার চাটমোহরে ফসলি জমিতে পুকুর খননের উৎসব!

পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন বিল ও লোকালয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করার যেন উৎসব চলছে। এই জমির মাটি চলে যাচ্ছে অনুমোদনবিহীন ইটভাটায়। পুকুর খননের জন্যও কোন প্রকার সরকারি অনুমতি বা অনুমোদন নেই। রাত-দিন এস্কেভেটর (ভেকু) মাটিকাটা মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

একাধিক সূত্র জানায়, ফসলি জমির সেই মাটি বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি শ্যালো ইঞ্জিন দ্বারা তৈরি ট্রলি (কুত্তাগাড়ি) ৫শত থেকে ৬শত টাকায়। কুত্তা গাড়িযোগে বিক্রিত মাটি যাচ্ছে ইটের ভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে। এই সকল গাড়ির দাপটের কারণে সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে কারো কোন মাথাব্যাথাই যেন নেই। গুটি কয়েক ব্যক্তির স্বার্থে সরকারি রাস্তা বিনষ্ট করা হচ্ছে দেদারছে। চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোরা বিলে, মথুরাপুর ইউনিয়নের চিরইল বিলে, ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ ও কাটাখালী, হরিপুর, নিমাইচড়া ও হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে অবাধে পুকুর খনন করা হচ্ছে। যার কোন প্রকার অনুমোদনই নেই বললেই চলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের চিরইল গিয়ে দেখা যায়, তিনটি এস্কেভেটর (ভেকু, মাটিকাটা মেশিন) দিয়ে বিলের ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। যাদের কোন অনুমোদন নেই। একই অবস্থা ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গমোরা বিলেও।

এখানকার ফসলি জমিতে শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন চলছে আর ধ্বংস হচ্ছে চলাচলের রাস্তা। এসব খননকৃত মাটি সঙ্গে সঙ্গেই ৮/১০টি শ্যালো ইঞ্জিন দ্বারা তৈরি ট্রলি (কুত্তাগাড়ি) করে আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছাইকোলা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান নুরুর অনুমতি নিয়েই এই খনন কাজ চলছে।

ছাইকোলা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ নুরুজ্জামান নুরু বলেন, মাটি কাটছে, তাই কী হইছে। রাস্তা নষ্ট হলে আমি দেখবো। কোন অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদ দেন তো ওসব।

ফসলি জমির মালিক মাটি কাটার জন্য মাটি ব্যবসায়ীর সাথে চুক্তি করে এই কাজ করছে বলে জানান স্থানীয়রা বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, মাটি বহনকারী কুত্তাগাড়ির দাপটে প্রধান প্রধান রাস্তাসহ জনচলাচলের অন্যান্য সড়কগুলির চরম ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

পাশিপাশি মাটি বহনকারী এসব কুত্তাগাড়ির মাটি বহন করার সময় ধুলাবালিতে পথ চলাচলকারী শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যা হচ্ছে। মাটি ক্রেতারা জানান, ফসলি জমিতে মাটি কেটে বিক্রি করার জন্য কোন প্রশাসনিক অনুমতি নেওয়া হয়নি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সৈকত ইসলাম বলেন, আমরা খবর পাওয়ার পরপরই ফসলি জমিতে মাটিকাটা বন্ধ করে দিচ্ছি। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলেন জানান এই কর্মকর্তা।