বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ‘শেখ জামে মসজিদ’

শেখ জামে মসজিদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত নীলফামারীর একটি চারচালা কুড়ের ঘর। যে কুড়ের ঘরের নামাজ পড়তেন সবাই। সফরসঙ্গীদের নিয়ে নামাজ পড়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেও। এ মসজিদই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ‘শেখ জামে মসজিদ’।

৫২ বছর আগের কথা। আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনের প্রচারণায় অংশ নিতে নীলফামারী যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারিখটি ছিল ১৯৬৯ সালের ২৩ অক্টোবর। এদিন নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দলীয় ব্যানারে জনসভা (প্রচারণা) করার উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসযোগে নীলফামারী আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

জনসভায় আসার পথে গাড়ি থেকে নেমে চারচালা কুঁড়ে ঘরের মসজিদে সফলসঙ্গীদের নিয়ে নামাজ পড়েন বঙ্গবন্ধু। তখন কাঁচা ঘরটিতেই স্থানীয়রা সবাই নামাজ আদায় করতেন। সে সময় মসজিদটির কোনো নামও ছিল না। বঙ্গবন্ধু এ মসজিদে নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় স্থানীয় উমর শেখের হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে বলেন-
‘আমার জন্য দোয়া করবেন, আমার দল ক্ষমতায় এলে পাকা মসজিদ বানিয়ে দেবো।’ তারপরই মসজিদটির নতুন নাম রাখা হয়- ‘শেখ জামে মসজিদ।’

১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কথা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্থানীয়রা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সেই মসজিদ নির্মাণে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

ওই টাকায় ইট সিমেন্ট দিয়ে ২০ হাত দৈর্ঘ্য ও ১০ হাত প্রস্থের একটি পাকা টিনশেড মসজিদ ঘর নির্মাণ করা হয়। ওই মসজিদের নাম রাখা হয় ‘শেখ জামে মসজিদ।

গত পাঁচ দশক ধরে যে মসজিদটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বহন করে আসছে। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার অনুদানে নীলফামারীর সেই চারচালা কুঁড়েঘরের মসজিদটি এখন মডেল মসজিদে পরিণত হয়েছে।

২০১৪ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানে একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়। যে মসজিদটিতে বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে প্রথমে ৫০০ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। তারপর ১৯৭২ সালে ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেখানেই আজ ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নিমির্ত স্মৃতিবিজড়িত ‘শেখ জামে মসজিদ’-এ ধ্বনিত হয় মহান আল্লাহর নাম।