বশেমুরবিপ্রবির এগিয়ে চলার বড় বাধা অভ্যন্তরীণ রাজনীতি!

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা অনিয়ম – দুর্নীতিতে প্রতিনিয়ত সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছে। পূর্বের উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরুদ্দিন এর বিদায়বেলায় সীমাহীন দুর্নীতি আর অনিয়ম নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এরপর গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব। নিয়োগ প্রাপ্তির এক বছরেই নতুন একাডেমিক ভবনের পাঁচটি তলার কাজ প্রায় শেষের দিকে। পুরাতন একাডেমিক ভবনের সর্বশেষ তলার কাজ শেষের দিকে। বর্ধিত করণের কাজ চলছে কেন্দ্রীয় মসজিদের। কাজ শুরু হয়েছে বছরের পর বছর শুধুমাত্র ক্যালেন্ডারে দৃশ্যমান প্রধান ফটকের কাজও। তবে প্রধান ফটকের কাজ ধীরগতিতে চলায় অভিযোগও রয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে। আবাসিক হলে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করণ, গণরুমের পরিবর্তে রুমের ব্যবস্থাকরণ ও এক সিটে একজন শিক্ষার্থীকে রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

খুলনাগামী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভাড়া করা হয়েছে মওকুফ।অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সুবিধার্থে অতিদ্রুত নতুন একাডেমিক ভবনের কাজ শেষ করে শ্রেণিকক্ষের সংকটের সমাধানও করা হয়েছে। ইটিই বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ ও আইসিটি ইন্সটিটিউট নিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন-দাবি শেষ হয়েছে উপাচার্যের হস্তক্ষেপে সমাধানের মাধ্যমে।তবে এখনো পড়াশুনার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরেনি।মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন,ক্যাফেটেরিয়া চালু,শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ও ভর্তি ফি কমানো,বিভিন্ন হলের বেহাল অবস্থা,শিক্ষক স্বল্পতা, দ্রুত ইম্প্রুভমেন্ট চালু এবং লাইব্রেরিতে পড়াশুনার পরিবেশ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। যদিও সেমিস্টার ফি ও ভর্তি ফি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে ইউজিসির সাথে আলোচনা চলছে।অন্যদিকে করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্ত আলোচনার ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব।যা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে। আবার শিক্ষক স্বল্পতার সমস্যা কাটাতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে।তবে উপাচার্যের ইতিবাচক সিদ্ধান্তেও নেতিবাচকতা থেকে মুক্ত হতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর পেছনের কারণ হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেখছেন ‘অভ্যন্তরীন নোংরা রাজনীতি’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীবান্ধব অনেক সিদ্ধান্ত নিতে বিভিন্ন সময় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের থেকেও বাধা আসছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত হতে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের।এমন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রেখে শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশুনার পরিবেশ তৈরি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য উপাচার্যের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ও কর্মকান্ডের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, দলাদলি ও দ্বন্দ্বের অবসান হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।