বিক্রম-সোনিকার মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর অভ্যাস ছিল : রচনা

অভিনেতা বিক্রমের গাড়ি দুর্ঘটনায় নামী মডেল সোনিকার মৃত্যু তদন্তে এবার ঘোড়া ছুটছে। দফায় দফায় বিক্রমকে জেরা করা থেকে শুরু করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সাজাচ্ছে পুলিশ।

যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার হতে পারেন বিক্রম। টান টান তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যেই স্থানীয় গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুলছেন একের পর এক টেলিউড-টলিউড তারকারা। বিক্রম-সোনিকাকে নিয়ে এবার কলম ধরলেন টলি নায়িকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিক্রমকে আমি খুব ভালমতোই চিনি। ওর সঙ্গে আমার অনেকবারই কথা হয়েছে। কথা বলে ওকে খুবই ভদ্র-সভ্য বলেই মনে হয়। তবে ওইভাবে তো কয়েকঘন্টা কথা বলে একটা মানুষ সম্পর্কে জাজমেন্ট দেওয়া যায় না। সেটা সম্ভবও নয়। বিক্রম-সোনিকা, দুজনের সঙ্গেই যেটা ঘটল সেটা খুবই দুঃখজনক, মর্মান্তিক।

আমার মনে হয়, দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। বিক্রম যে সেদিনই প্রথম মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়েছে তা তো নয়। নিশ্চয়ই এর আগেও নাইটক্লাবে গিয়েছে, মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়েছে। ওই দিন ওর কপালটা খারাপ ছিল। কিন্তু

আমার একটা ব্যাপার খুব অবাক লাগছে যে সেলেব্রিটি বলেই কি ওকে নিয়ে বেশি লেবু চটকানো হচ্ছে? এটা তো নতুন কোনও ঘটনা নয়। প্রতিদিনই কিছু মানুষ নাইটক্লাবে যায়। সেখান থেকে মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরে। এর আগেও এরকম অনেক দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।

বাইপাশের ধারে তো প্রায় হচ্ছে। তার মানে কিন্তু এটা নয় যে, আমি বিক্রমের মদ খেয়ে গাড়ি চালানোটাকে সাপোর্ট করছি। আমার এই কথাগুলো পড়ে হয়তো মনে হতে পারে যে আমি হয়তো বিক্রমের পক্ষে কথা বলছি। কিন্তু আমি কারোর পক্ষে বা বিপক্ষে বলছি না। আমি কিছু সিস্টেমের বিরুদ্ধে আমি কথা বলছি।

আমার বক্তব্য, রাতের বেলায় মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসন আগে কেন কোনও ব্যবস্থা নেই নি? বিক্রমের গাড়ি দুর্ঘটনার পরই কেন মনে হচ্ছে ব্রেথ অ্যানালাইজার, ইত্যাদি ইত্যাদি ব্যবহার করার কথা। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এই পদক্ষেপগুলোই বেশিদিন সক্রিয় থাকবে না।

তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় যে বিক্রম দোষী তাহলে ও শাস্তি পাবে। সেটা আইনের উপরই আমাদের ছেড়ে দেওয়া দরকার বলে আমার মনে হয়। তবে সেইসঙ্গে আমার এটাও মনে হয়, শুধু একা বিক্রম নয়, সোনিকাও ড্রিঙ্ক করেছিল। আর ওরা দুজনে কেউই ওইদিন প্রথম একসঙ্গে মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরেনি। এই অভ্যাসটা নিশ্চয়ই ওদের ছিল। সোনিকা মারা গেছে বলে হয়তো ওকে নিয়ে কোনও কথা হচ্ছে না কিন্তু সেদিনের ঘটনার জন্য ওরও কিছুটা রেসপন্সিবিলিটি আছে। সে যাই হোক, সেদিন দুজনেরই ভাগ্য খুব খারাপ ছিল। দুটো উজ্বল ভবিষ্যত শেষ হয়ে গেল।

আরও একটা কথা, অনেকেই বলছেন বিক্রম প্রভাব খাটিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, বিপদে পড়লে প্রভাব কে খাটায় না বলুন তো? যাঁদের সোর্স আছে তারাই সোর্স খাটান। বিক্রমও হয়তো তাই করছে। কিন্তু ওর যদি দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে প্রভাব খাটিয়ে কি কোনও লাভ হবে? বিক্রমের আরও কনশাস আরও রেসপন্সেবল হওয়া উচিত ছিল, এখন এই কথাটাই সবাই বলবে। কিন্তু যেটা হয়ে গেছে সেটার তো কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। এত চর্চা, এত সমালোচনা একদিন সব বন্ধ হয়ে যাবে।