ব্যক্তি উদ্যোগে শিক্ষিকার শহীদ মিনার নির্মাণ
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রমিতা বংকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের অর্থে শহীদ মিনার করে দিলেন আলেয়া ফেরদৌসী নামে এক শিক্ষিকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহযোগিতায় তিনি সেখানে শহীদ মিনারটি স্থাপন করে দেন।
আলেয়া ফেরদৌসী জানান, শহর হতে দূরত্ব ও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে স্কুলের ছেলে-মেয়েরা ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরিতে অংশগ্রহণ করতে পারে না। ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণ করার জন্য কলাগাছ, বাঁশ, রঙিন কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করার প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর হতে প্রতি বছরই অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয় সেখানে।
তিনি জানান, গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ফুল দিয়ে তোড়া বানিয়ে শিশির ভেজা একুশের প্রভাতে গ্রামের মেঠোপথ হেঁটে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা স্কুলের মাঠে উপস্থিত হতো। উপস্থিত সকলে সমস্বরে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’ গান গাইতে গাইতে সবাই স্কুলমাঠ প্রদক্ষিণ করা হতো।
আলেয়া ফেরদৌসী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্কুল কমিটির সঙ্গে আলোচনা করছিলাম স্কুলে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলে ভালো হতো। সবাই ভাষা আন্দোলন, ভাষার জন্য দেশের সন্তানদের ত্যাগ ও মায়ের ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারতো। কিন্ত প্রত্যন্ত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করার কোনো প্রকল্প না থাকায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। একদিন আলোচনা সভায় উপস্থিত সবাইকে বিষয়টি জানালেও কেউ তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এরপর নিজেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শহীদ মিনার করার জন্য স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কমিটির পক্ষ হতেয় অনুমতিও দেয়া হয়। এরপর স্কুল ভবনের পাশে একটু খালি জায়গা শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এরপর সবার সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয় ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার শহীদ মিনার। এখন আর স্কুলের শিক্ষার্থী দূরের শহীদ মিনারে যেতে হয় না। সবাই এখানেই আসে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন