মিশরে শুরু হচ্ছে কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলন

মিশরের শারম-আল-শেখ এ শুরু হচ্ছে ২৭ তম জলবায়ু সম্মেলন (কপ–২৭ বা কনফারেন্স অব পার্টিজ-২৭)।

আজ ৬ নভেম্বর (রবিবার) জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বের ব্যবস্থা নেয়ার ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলনের পর্দা উঠছে। চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
সম্মেলনে যোগ দিতে শার্ম আল শেখ এর রেড সি রিসোর্টে সমবেত হচ্ছেন ১২০ টি’রও বেশি দেশের নেতা।

দু’সপ্তাহের এই সম্মেলনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অংশ নেবে। যদিও মিশরের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে উদ্বেগের কারণে কিছু অধিকারকর্মী এবার সম্মেলনে যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে বিবিসি।

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নতুন প্রধান সায়মন স্টিল এবং মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কপ-২৭ প্রেসিডেন্ট সামেহ শুকরি সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখবেন। এরপর সোম ও মঙ্গলবার দুইদিন বক্তব্য রাখবেন বিশ্ব নেতারা। তারা চলে যাওয়ার পর সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা আলোচনা চালাবেন।
বিশ্ব এ মুহুর্তে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার মতো অবস্থায় নেই বলে গত মাসেই সতর্ক করা হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক একটি গবষণা প্রতিবেদনে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবে গত বছর নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগও ঘন ঘনই ঘটতে দেখা গেছে।

জাতিসংঘ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গতবছরের কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের পর থেকে বিশ্বের দেশগুলোর সরকারের কার্বন নিঃসরন কমানোর পরিকল্পনায় দুঃখজনকভাবে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়নি। এ পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে সমাজে রূপান্তর ঘটানো গেলেই কেবল বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব।
এর প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নতুন প্রধান সায়মন স্টিল এবারের সম্মেলনে গতবছরের নেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোই কাজে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ব্যাপক রূপান্তর, যা অবশ্যই ঘটতে হবে- সেপথে এগিয়ে যাওয়ারও তাগাদা দিয়েছেন তিনি।

গত বছর গ্লাসগোর কপ-২৬ সম্মেলনে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়েছিল: ধাপে ধাপে কয়লার ব্যবহার কমানো। বন উজাড় ২০৩০ সালের মধ্যে বন্ধ করা। মিথেন গ্যাস নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ কমানো। জাতিসংঘে নতুন জলবায়ু কর্মসূচি পরিকল্পনা জমা দেয়া।

এইসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ দিতে গেলে প্রয়োজন অর্থের। উন্নয়নশীল দেশগুলো চাইছে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা এবং সমর্থন দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি উন্নত দেশগুলো গতবার দিয়েছিল তা বহাল রাখা হোক। কিন্তু একইসঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলো এও চায় যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ প্রভাব মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হওয়াই কেবল নয় বরং, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তারা এরই মধ্যে যে ক্ষতির শিকার হয়েছে তা কটিয়ে উঠতে আর্থিক সহায়তা এবং আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হোক।

এবারের কপ-২৭ সম্মেলনে এই প্রথম এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে থাকছে। সম্মেলনে বিাভন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়াও দু’সপ্তাহ ধরে ওয়ার্কশপ, প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মতো আরও নানা অনুষ্ঠান চলবে।