মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় যমজ দুই বোনের আলোড়ন সৃষ্টি

জিপিএ ৫ না পেয়েও মেডিকেলে চান্স পেয়ে কিশোরগঞ্জে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন যমজ দুই বোন। যমজ ওই দুই বোনের নাম নুসরাত জাহান সুরভী ও ইসরাত জাহান পূরবী। তারা দুজনই কিশোরগঞ্জের ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেন।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গান্ধী বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী মো. মাজহারুল হক এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আয়েশা আক্তার খাতুনের সন্তান সুরভী ও পূরবী।পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় শাহরিয়ার তন্ময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসি অনার্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

অবাক করার বিষয় হলো, জময ওই দুই বোনের পরীক্ষার রেজাল্টও একই। দুজনই এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলেন। দুজনই কাকতালীয়ভাবে এইচএসসিতে দুজনই জিপিএ ৪.৮৩ পেয়েছেন।

এত কিছু মিল থাকলেও এবার অমিল ঘটবে দুজনের। কারণ সুরভী চান্স পেয়েছেন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আর পূরবী সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে।

তবে দুজনের লক্ষ থাকবে একই। এখন তাদের শুধুই এগিয়ে যাওয়ার এবং স্বপ্ন পূরণের পালা। সামনে অনাগত বর্ণিল জীবনের হাতছানি।

সাফল্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শুক্রবার রাতে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়া (বড় বোন) সুরভী বলেন, মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল আমরা ডাক্তার হই। আর সে স্বপ্ন পূরণে আমরা দুই বোন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হই দুর্গম চরাঞ্চলে অবস্থিত চরটেকি হাইস্কুলে। আমরা দুই বোন দুটি সাইকেলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সে স্কুলে গেছি।

দুর্গম পথ এমনকি বৈরী প্রকৃতি মাড়িয়ে প্রতিদিন স্কুলে উপস্থিত হয়ে মনোযোগসহকারে ক্লাস করেছি।

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সুরভী বলেন, জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে পাস করায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এমনকি আমাদের পরিবারের মধ্যে বিষাদের ছায়া নেমে আসে। কিন্তু আমরা আরও দৃঢ় মনোবল নিয়ে পড়াশোনা করি। এখন সবার মুখেই হাসি।

সুরভী ও পূরবীর গর্বিত বাবা মাজহারুল হক বলেন, আমার এ দুই মেয়ে লেখাপড়া ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। আজকের এ সাফল্য তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেরই ফসল।

রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল মো. শরীফ আহমেদ বলেন, যমজ এ দুই বোন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। তারা এমন ভালো ফলাফল করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু জিপিএ-৫ না পাওয়ায় আমাদেরও খারাপ লেগেছিল। এখন তারা শেষ বলে ছক্কা মেরে যেন আমাদেরকে জিতিয়ে দিল। তাদের অসামান্য সাফল্যে আমরা আজ আনন্দিত এবং গর্বিত।