মেয়েটিকে বিদেশ পাচারের পরিকল্পনা ছিল মাহিনের

ঢাকা: অপহরণের পর হিমুকে প্রথমে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানা এলাকায় আটক রাখে মাহিন। এরপর রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে দিয়ে বসবাস করে। পরিবারের সম্মান ও নিজের জীবন রক্ষার্থে হিমু বাধ্য হয়ে বসবাস করে আসছিল।

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর পুলিশের কাছে এসব কথা স্বীকার করেছে মো. মাহিন। সে এও জানায়, হিমুকে বিদেশে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) মধ্য বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারের সামনে থেকে মোছা. শামীমা আক্তার ওরফে হিমুকে (১৪) কে উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এসময় অপহরণকারী মাহিন নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রংপুর জেলার কোতয়ালী থানার ওয়ার্ড নং-২৫, শালবন মিস্ত্রিপাড়ার নিজ বাসার সামনে থেকে অপহৃত হন শামীমা আক্তার হিমু। অপহরণকারী মো. মাহিন সহযোগীদের নিয়ে হিমুকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে আটকে রাখে বলে জানা গেছে।

পিবিআই জানায়, হিমু আরসিসিআই পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। মাহিন দীর্ঘদিন স্কুলের যাতায়াতের পথে উত্যক্ত করতো হিমুকে। পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করে। পরে ভিকটিমের পরিবারের প্রতিবাদে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহিন হিমুকে অপহরণ করে।

ওই ঘটনায় হিমুর মা হাসি আক্তার বাদি হয়ে রংপুরের কোতয়ালী থানার ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২২। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে অপহৃত ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণের ঘটনায় জড়িত মূল আসামি মাহিনকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

আদালত পলাতক আসামি মাহিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ তার ক্রোকি ও হুলিয়া পরোয়ানা ইস্যু করেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ জানান, পলাতক আসামি মাহিন অপহৃত হিমুসহ রাজধানীতে আত্মগোপন করে আছে জানতে পেরে পিবিআই ঢাকা মেট্রো যোগাযোগ করে। ভিকটিম পরিবারের সঙ্গে কথা বলে অপহরণের পুরো ঘটনাটি শুনে ভিকটিম ও অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন নম্বরসহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

পরে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম মধ্য বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারের সামনে থেকে মাহিনকে গ্রেফতার ও হিমুকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার মাহিন রংপুরের-কোতোয়ালী থানাধীন ধাপ শিমুলবাগ স্টাফ কোয়াটারে বসবাস করতো। গ্রেফতার মাহিন ও অপহৃত হিমু সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের জিম্মায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।