ম্যানইউর ইতিহাস প্রতিপক্ষের জালে ৯ গোল দিয়ে

পুরো ম্যাচটা দেখলেই মনে হবে এটা যেন একটি হাইলাইটস। একের পর এক গোল। সফরকারী সাউদাম্পটন দিশেহারা হয়ে পড়েছিল গোল হজম করতে করতে। শেষ পর্যন্ত ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সফরকারী সাউদাম্পটনের জালে মোট ৯ বার বল জড়িয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

৯-০ গোলের এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানসিটিকে ছুঁয়ে ফেললো ম্যানইউ। ২২ ম্যাচ শেষে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানেই রইলো ম্যানইউ। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে ম্যানসিটি। তবে, বড় তথ্য হলো ম্যানসিটি ম্যাচও খেলেছে ২টি কম। অর্থ্যাৎ, তাদের ৪৪ পয়েন্ট এসেছে মাত্র ২০ ম্যাচ খেলে।

বিশ্বকাপে জার্মানি ৭ গোল দিয়েছিল ব্রাজিলকে। আবার গত বছর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮ গোল হজম করতে হয়েছিল মেসির বার্সেলোনাকে।

মঙ্গলবার রাতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সেই স্মৃতিইযেন ফিরিয়ে আনলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। গুনে গুনে ৯টি গোল খেয়ে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গোলো সাউদাম্পটনের। অন্যদিকে নিজেদের রেকর্ড ভেঙেই ফের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে ঢুকে পড়ল রেড ডেভিলদের নাম।

পুরো ম্যাচই বলতে গেলে ১০জন নিয়ে খেলেছে সাউদাম্পটন। ম্যাচের ৮২ সেকেন্ডের মাথায় (দেড় মিনিট) সাউদাম্পটনের আলেকজান্ডার জাঙ্কউইটজকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি।

অথচ প্রিমিয়ার লিগে এটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। মাঠে নেমে দেড় মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে বের হয়ে যেতে হলো তাকে। ৮৬ মিনিটে আরও একটি লাল কার্ড। এবার সাউদাম্পটনের ইয়ান বেডনারেককে মাঠ থেকে বের করে দিলেন রেফারি। এককথায় বিভীষিকাময় রাত কাটালেন সাউদাম্পটন ফুটবলাররা।

গোলের মূল শো শুরু হয়েছিল ১৮ মিনিট থেকে। সেই শো চললো দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইম পর্যন্ত। সাউদাম্পটনের রক্ষণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলে একের পর এক গোল করে গেলেন রাশফিল্ড, কাভানি, ব্রুনো ফার্নান্ডেজরা। একটি গোল আবার হলো আত্মঘাতিও।

১৮ মিনিটে প্রথম গোল করেন অ্যারোন ওয়ান বিসাকা। ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন মার্কাস রাশফোর্ড। ৩৪ মিনিটে আত্মঘাতি গোল করে নিজেদের জালেই বল জড়ান সাউদাম্পটনের ইয়ান বেডনারেক। তাকেই ৮৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি। ৩৯ মিনিটে গোল করেন এডিনসন কাভানি।

৬৯ মিনিটে দলের পঞ্চম এবং নিজের প্রথম গোল করেন অ্যান্থোনি মার্শাল। ৭১ মিনিটে ৬ষ্ঠ গোল করেন স্টক ম্যাকটোমিনায়। ৮৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ৭ম গোল করেনে ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ৯০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ৮ম গোল করেন অ্যান্থোনি মার্শাল। ৯০+৩ মিনিটে দলের ৯ম গোল করেন ড্যানিয়েল জেমস।

সাউটাম্পটনকে গোলের মালা পরিয়ে যে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছেন কাভানিরা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে ১৯৯৫ সালে এই ম্যানইউ’ই ইপসউইচ টাউনকে ৯-০ গোলে হারিয়েছিল। নতুন করে সেই রেকর্ড আবার ছুঁলো তারা।

ছেলেদের খেলায় উচ্ছ্বসিত কোচ ওলে গানার শোলসায়ের বলেন, ‘একেবারে নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছিল ওরা। হ্যারি, ভিক্টর, ডেভিড, স্কট প্রধমার্ধেই তেড়েফুঁড়ে উঠেছিল। দ্বিতীয়ার্ধে একই মনোভাব লক্ষ্য করলাম। ওরা আরও গোল দিতে চাইছিল। আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে যে ব্যবধানে অনেকটা এগিয়ে থেকেও গোলের খিদেটা হারিয়ে যায়নি। আর সেটাই ফুটবলারদের সবচেয়ে ভাল অভ্যাস।’