যশোরের কেশবপুরে শারদীয় দূর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষ্যে চলছে শেষ প্রস্তুুতি

যশোরের কেশবপুর উপজেলার ৯২মন্ডপে চলছে শারদীয় দূর্গোৎসব উদযাপনের শেষ প্রস্তুুতি। চলছে দেবী দূর্গার অঙ্গে নানা রঙ্গের আল্পনা আঁকার কাজ। শুরু হয়েছে দেবী বরণের ব্যাপক তোড়-জোড়। আর মাত্র কয়েক দিন বাকী শারদীয় দূর্গোৎসাবের। আবার কোথাও শেষ হয়েছে সকল প্রস্তুুতি। শুধুই অপেক্ষা সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। সেই শুভক্ষণের বেশী দিন বাকীও নেই।

আগামী সোমবার হবে সেই প্রতিক্ষিত ক্ষণ গননার আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি। শুরু হবে ঢাকের তালে-তালে মন্দিরে-মন্দিরে দেবী অর্চনা। ভক্তদের আনাগোনায় মুখরিত হবে প্রতিটি পুঁজা মন্দির।

সারা দেশের ন্যায় কেশবপুরেও হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। তাই প্রতি বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণীর-পেশার সব বয়সী নারী-পুরুষেরা বর্ণিল সাজে সেজে আনন্দে এই দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকে। পুঁজা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা দূর্গা মায়ের আর্শ্বিাদ পেতে মন্ডপ থেকে মন্ডপে ছুটে বেড়ায়।

এ উপজেলার সবগুলো পুজা মন্ডপে প্রতিমা শিল্পীরা ভক্তদের আনন্দ দিতে দিনরাত পরিশ্রম করে দেবীদূর্গার প্রতিমা মূর্তিকে রং তুলির আঁচড়ে আকর্ষনীয় করে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আলোক সজ্জা, প্যান্ডেল ও গেট সৌন্দর্যের কাজ করতে গিয়ে যেন দম ছাড়ার ফুসরত নাই আয়োজক কমিটির।

আগামী ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে দেবী পক্ষ্যের ষষ্টি তিথীতে বোধন তলায় মঙ্গল ঘট স্থাপনের মধ্যদিয়ে শ্রী-শ্রী দূর্গা পুজা শুরু হবে। শাস্ত্রীয় পন্ডিতরা বলেছেন এ বছর দেবী দূর্গার দোলায় আগমন এবং গজে গমন হচ্ছে।

আসন্ন দূর্গা পূজায় এ উপজেলার মোট ৯২ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

বালিয়াডাঙ্গা সর্বজনীন দেবালয় মন্দির চত্বরে গত (১৬ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সকালে আসন্ন শারদীয় দুর্গা পুজা ২০২০ উপলক্ষে ৯২ টি মন্দির কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি দুলাল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে কেশবপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জসীম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পলাশ মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।

মতিবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশিত কভিট-১৯” বিষয়ে স্বর্তকতা বিষয়ক নির্দেশনা মেনে পুজা অনুষ্ঠান পালনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার সাহা বলেন, কেশবপুর পৌরসভায় ৮টি, ত্রিমোহীনি ইউনিয়নে ১টি, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে ১২টি, মজিদপুর ইউনিয়নে ৭টি, বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে ৪টি, মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ৪টি, কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ৭টি, পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৯টি, সুফলাকাটি ইউনিয়নে ১০টি, গৌরিঘোনা ইউনিয়নে ১১টি, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ১০টি ও হাসানপুর ইউনিয়নে ৯টি মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের দূর্গা পূজায় আইন শৃংখলার বিষয়ে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নির্বিঘ্নে দূর্গা পূজা উদযাপনে ৪ স্তরের সার্বিক নিরাপত্তা বলয় রয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, আনসার-ভিডিপি ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর পাশাপাশি অধিক নিরাপত্তার জন্য মন্ডপের আশপাশে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ মোতায়ন থাকবে। এ ছাড়া উপজেলা ব্যাপী পুলিশের ভ্রাম্যম্যান টিম সর্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, করোনা কালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গোৎসব পালনের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। পূজা চলাকালীন সময়ে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে।