যশোরের রাজগঞ্জে বাল্য বিয়ের আয়োজন বন্ধ করলো পুলিশ

মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদরাসা ছাত্রীর বাল্য বিয়ের আয়োজন পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ হয়।
মেয়েটি ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের প্রবাসী তৌহিদুল ইসলামের মেয়ে। স্থানীয় একটি দাখিল মাদরাসার ১০ শ্রেণির ছাত্রী সে।

আর বর বিপ্লব হোসেন (২৫) ওই ইউনিয়নের মনোহরপুর বিশ্বাস পাড়ার মৃত আহাদ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সাইকেল ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান- মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে পাশাপাশি গ্রামে বাড়ি বর ও কনের। দুই পরিবারের মতেই ঠিক হয়েছে বিয়ের দিনক্ষণ। কনের বাড়ি বরযাত্রী যাওয়ার জন্য প্রস্তুত পাঁচটি মাইক্রোবাস। কনের বাড়িও চলছিল ৩০০ লোকের রান্নাবান্নার আয়োজন। আনন্দঘন এত আয়োজন পণ্ড হলো পুলিশের তৎপরতায়। কনের বয়স ১৫ বছর হওয়ায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দিল পুলিশ।

পুলিশের ভয়ে বরযাত্রী ঢোকার সাহস পাননি কনের বাড়িতে। অবশেষে কনের বাড়ি থেকে ভ্যানে করে মাংশ ভাত পাঠানো হলো বরের বাড়িতে। সেখানে খেয়েদেয়ে বিদায় হলেন বরযাত্রী।

এদিকে বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে মণিরামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার তাঁর দপ্তরের ক্রডিট সুপারভাইজার শহিদুল ইসলামকে কনের বাড়িতে পাঠিয়েছেন।

শহিদুল ইসলাম বলেন- আমরা খবর পাওয়ার আগে পুলিশ এসে বিয়ে বন্ধ করে দেন। ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখি বরপক্ষ আসেননি। কনের বাড়ির আশপাশের লোকজন খাওয়া দাওয়া করছেন। কনের বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার ভ্যানে করে বরের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।
তিনি বলেন- কনে পক্ষ আমাদের লিখিত দিয়েছেন মেয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না। কনের অভিভাবকদের মুচলেকা নিয়ে আমরা চলে এসেছি।

রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আজমল হোসেন বলেন, বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে আমি হানুয়ার গ্রামে মেয়ের বাড়িতে যাই। মেয়ের নানা ও মা কথা দিয়েছেন তাঁরা এখন মেয়েটির বিয়ে দেবেন না। বরপক্ষকেও নিষেধ করা হয়েছে।

মণিরামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমী আক্তার বলেন- শুনেছি, পুলিশ বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করেছে। বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার জন্য অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছি। বাল্যবিয়ে না দেওয়ার শর্তে মেয়ের পরিবার লিখিত দিয়েছেন।