রাজগঞ্জে ধান সিদ্ধ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষাণীরা

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলে আমন ধান কেটে, ঝেঁড়ে-ঝুঁড়ে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। এখন সেই ধান রাত জেগে সিদ্ধ করে সকাল থেকে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণীরা। রাত-দিন পরিশ্রম করার পরেও, যেনো ক্লান্তি নেই তাদের। নিজেদের ক্ষেতের ধান সিদ্ধ-শুকনো করার আনন্দে ভাসছেন তারা।

সম্প্রতি রাজগঞ্জের চন্ডিপুর স্কুল মাঠে গিয়ে দেখা যায়- ওই গ্রামের কৃষাণীরা পুরো মাঠে ধান শুকানোর জন্য নিজ নিজ নেটজাল বিছিয়ে রেখেছেন। বাড়ি থেকে সিদ্ধ করা ধান বস্তায় করে ভ্যান অথবা বাইসাইকেলে করে মাঠে বিছানো নেটজালের উপর ঢালছেন তারা। আর কৃষাণীরা সে ধান পা দিয়ে নেটজালে আলগা করে দিচ্ছেন। শীতের মিষ্টি রোদে বারবার ধানে পা দিচ্ছেন কৃষাণীরা। যত বেশি ধানে পা দিবেন, ততই তাড়াতাড়ি শুকাবে ধান।

কৃষাণীদের কাজের গতি দেখে মনে হয় কোনো ক্লান্তি নেই তাদের। কেনো না আগামী ইরি-বোরো মৌসুম পর্যন্ত ঘরের চাল করে নিতে হবে তাদের।

কৃষাণী সাবিনা ইয়াসমিন ও সাজেদা বেগম বলেন- আমন ধান কাটা, ঝাঁড়া-ঝুঁড়া হয়ে গেছে। খাওয়ার ধান রেখে বাকি ধান বিক্রি করাও হয়েগেছে। ছয় মাসের জন্য ঘরের চাল তৈরি করতে হবে। তাই ভোররাতে ধান সিদ্ধ করেছি। সিদ্ধ করা ধান এই স্কুল মাঠে শুকাচ্ছি।

শাহিদা বেগম নামের অপর এক কৃষাণী বলেন- এবার আমরা ৩ বিঘা মতো জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। এবছর আল্লাহর রহমতে ফলন ভালো হয়েছে। জমির ধান কাটার পর গোছানো-গাছানো শেষ করেছি। এখন কষ্ট করে আমরা ধান সিদ্ধ করছি খাওয়ার চাল তৈরির জন্য। এই ধান সকালে বস্তায় করে এই স্কুল মাঠে নিয়ে আসি শুকানোর জন্য। মাঠে নেট বিছিয়ে শুকাতে দিছি। আকাশের অবস্থা ভালো আছে, সারাদিনে সব ধান শুকিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। শুকানোর পরে মিলে ধান ভাঙাবো, আগামী ইরি-বোরো মৌসুম পর্যন্ত আমাদের খাওয়ার চালের জন্য আর কোন চিন্তা থাকবে না।
স্থানীয় আব্দুল বারীক নামের একজন কৃষক বলেন- আমন ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো পাইছি। বাড়ির খাওয়ার জন্য ধান সিদ্ধ-শুকানো করা হচ্ছে। আগামী ইরি-বোরো মৌসুম পর্যন্ত এই ধানের চালেই আমাদের সংসার চলবে।

স্থানীয় উপসহকারি কৃষি অফিসার ভগীরত চন্দ্র বলেন- এবার রাজগঞ্জ অঞ্চলে আমনে খুব ভালো ফলন হয়েছে। ধান কাটার পর ঝেঁড়ে গোছানো হয়েগেছে কৃষকদের। আশানুরূপ ফলন পেয়ে খুশি কৃষকেরা। যতোদূর জানি ধানের ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকেরা।