সময় টিভি’র সংবাদ

‘শুধু পুনর্বাসন নয়, টোলেরও ভাগ পাবেন পদ্মা সেতুতে ক্ষতিগ্রস্তরা’

যাদের ভিটে মাটিতে নির্মাণ হচ্ছে সেতুর অবকাঠামো, শুধু পুনর্বাসনই নয়, তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে কাজ করছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ। নানামুখী কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সেতুর টোল থেকে একটি অংশ বরাদ্দ রাখা হবে তাদের জীবনমান উন্নয়নে।

প্রকল্প এলাকায় ভূমি ছিলো না, কিন্তু বাস করতো এমন ৮৩৫টি পরিবারকে নতুন করে জমি বরাদ্দ দেয়া হবে। এরই মধ্যে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত জমির দলিল বুঝিয়ে দেয়ার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

খবর সময় টিভি নিউজ।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে করা মাওয়ার কুমারভোগের পুর্নবাসন কেন্দ্র এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চারদিকে সবুজের সমারোহ, চমৎকার গুছানো পরিকল্পিত এলাকাটি দেখে বোঝার উপায় নেই সেটি কোনো পুর্নবাসন কেন্দ্র নাকি রাজধানীর কোন বেসরকারি আবাসন প্রকল্প।

সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক, সার্ভিস এরিয়া, নদী শাসনের জন্য স্থানীয় যে মানুষদের ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, ভূমিহীন এরকম ২ হাজার ৬৩৫টি পরিবারকে ঠাঁই দেয়া হয়েছে ৪টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। আড়াই, পাঁচ ও সাড়ে ৭ কাঠা করে জমি দেয়া হয়েছে তাদের। দেয়া হয়েছে নগদ টাকাও।

পুর্নবাসন কেন্দ্রটির বাসিন্দারা বলেন. আগের তুলনায় জীবন মানের উন্নয়ন হয়েছে তাদের। পুর্নবাসন কেন্দ্র হওয়ায় সেখানে রয়েছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাও।

তবে পুর্নবাসনের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলে জীবন মান আর উন্নত হতো বলে মনে করেন সেখানকার বাসিন্দারা। কেউ কেউ আবার নিজেই ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেছেন পুর্নবাসন এলাকায়।

প্রকল্প এলাকার শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আছে মসজিদ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পানির পাম্প, সার্বক্ষণিক বিদ্যুত, সুপ্রশস্ত সড়কসহ নানা সুবিধা। এর মধ্যে শুরু হয়েছে জমির দলিল বুঝিয়ে দেয়ার কাজও।

পদ্মাসেতু প্রকল্প শুরুর আগের ও বর্তমান জীবন যাত্রার তুলনা করে বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, একটা সময় সেখানে ছিল না তেমন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। পুরো এলাকায় ছিলো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর হাসপাতাল। অপরিকল্পিত অগোছালো জীবন থেকে পরিকল্পিত জীবন ব্যবস্থায় আসতে পেরেছেন তারা শুধুমাত্র পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্যই, এমনটাই বলছেন পুনর্বাসন পাওয়া মানুষগুলো।

এখানকার মানুষদের পদ্মা সেতুতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ দিতে বিআরটিসির সাথে একটি চুক্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে সেতুর লাভ থেকে একটি অংশ তাদের জন্য ব্যয় করা হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, যত দিন প্রকল্পের কাজ চলবে, ততোদিন ক্ষতিগ্রস্ত পুনর্বাসিতদের জন্য কাজ করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলেও টোলের লভ্যাংশ থেকে একটা অংশ পুনর্বাসিতদের জীবন মান উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।