সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে গলঘোশিয়া নদীর নাব্যতা ফেরাতে খননের প্রয়োজন

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুলের গলঘোশিয়া নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খননের প্রয়োজন অতিব জরুরী।

কালিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলার চিংড়ী এবং কৃষি জমির পয়ঃনিষ্কাশনের একমাত্র নদী এটি। দীর্ঘদিন খননের অভাবে নদীর অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। হাওড়া নদীর প্রাণছুয়ে উজিরপুর ত্রিমুহনী অভিমুখ হইতে ঘোলা ত্রিমুহনী পর্যন্ত ১৭ কিলো মিটার নদীটি কোন রকম প্রাণে বেঁচে আছে বলা যায়।

বর্তমান এ অবস্থার কথা বিশ্লেষন করে বিশ্লেষকরা অনুমান করে বলেন, যে অবস্থায় নদীটি প্রবাহিত হচ্ছে তাতে এ অবস্থায় চলতে থাকলে খুব বেশি দিন লাগবে না নদীটির প্রাণ হারাতে। তার কারন হিসাবে জানতে চাইলে বিশ্লেষকরা বলেন, এখন নদীতে প্রতিনিয়ত কম বেশি জোয়ার ভাটার দেখা মিলছে কিন্তু আঁকা বাঁকা হওয়ার কারনে পলির পরিমান বেশি জমে দিন দিন চর পড়ে প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে না আনতে পারলে দুই উপজেলার প্রায় ৩ হাজারের ও বেশি ছোট বড় চিংড়ী ঘের বিলীন হওয়ার আশংখ্যা করছে।

আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার গলঘশিয়া নদীর দুই ধারে চিংড়ী চাষ হয় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে। তাই চিংড়ীর লক্ষমাত্রাকে সঠিক রাখতে হলে নদীকে বাঁচাতে খননের বিকল্প কিছু নেই। কয়েক বছর ধরে নদীতে সঠিক ভাবে জোয়ার ভাটা না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইতিমধ্যে শত শত চিংড়ী চাষীরা।

বিষয়টি নিয়ে চিংড়ী চাষীদের সাথে কথা বলতে গেলে চাষী মনিরুল বলেন, আমরা বহুদীন যাবত ঘের করছি কিন্তু পানির সঠিক সরবরাহ না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আপনারা নিজের চোঁখে দেখেন এবং যারা সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে দেখভাল করেন তাদেরকে আপনাদের লিখনীয়র মাধ্যমে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।

এখন বর্ষা মৌসুম হলে ও নদীর দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, নদীর কোন অস্তিত্ব নেই। তার পর এলাকার কিছু স্বার্থেন্যেশি লোক কৌশলে নদীর পাড়ে জমে থাকা পলিকে চর দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বন্দোব্যাবস্থা নিয়ে তাদের জমি আরও বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নদীর পাড়ে অবৈধ বেড়ীবাধ ও বেড়ীবাধের সামনে লবন সহনশীল বৃক্ষ রোপন করে দিন দিন নদীর মৃত্যু ডেকে আনতে সকল কৌশল অবলম্বন করছে। এক কথায় বলা যায় চর ভরাট সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ দখলে লিপ্ত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এখানে নদী দখলের মহোৎসব চলছে।

এমনি ভাবে অবৈধ দখল চলতে থাকলে নদীর ভারসাম্য, নাব্যতা এবং অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলতে বেশি দিন লাগবে না। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল চিংড়ী চাষের কথা চিন্তা করে নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে পেতে অবৈধ দখল মুক্তকরন ও খননের দাবি জানিয়ে চিংড়ী ঘের মালিক সহ এলাকার সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।