সাতক্ষীরার নলতায় শুরু হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহতর ইফতার মাহফিল

কাবা শরিফের পরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় সাতক্ষীরায়। জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতায় দিন দিন এ ইফতার মাহফিলের পরিধি আরো বাড়ছে।

আজ (২৪ মার্চ) শুক্রবার পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম দিন, সাতক্ষীরার নলতায় একসঙ্গে ১০ হাজার মানুষের ইফতার শুরু।

১৯৩৫ সালে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রাঃ) নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে প্রতি বছরই রমজান মাসব্যাপী এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পরও মিশন কর্তৃপক্ষ এ মাহফিলকে অব্যাহত রেখেছে।

প্রথম দিকে ইফতার মাহফিলে উপস্থিতি কম হলেও ধীরে ধীরে তার পরিধি বেড়ে এখন দশ হাজারে পৌঁছেছে। বর্তমানে শাহ সুফি হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রাঃ) এর রওজা প্রাঙ্গনেই এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। রোজার শুরু থেকেই প্রতিদিন সেখানে একত্রিত হয়ে ইফতার করেন প্রায় ছয় হাজার মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা ইফতারের জন্য ছুটে যান সেখানে।

বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য অস্থায়ীভাবে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইফতারি বিলি-বন্টন ও তদারকির জন্য রয়েছে ৬ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক।

ইফতারি সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে খেজুর, ছোলা, সিংগড়া, ফিন্নি, চিড়া, কলা ও ডিম। এত মানুষের ইফতারির আয়োজনের পরও পার্শ্ববর্তী ১৫-২০টা মসজিদে এক বার করে ইফতারি পৌঁছে দেওয়া সহ সাতক্ষীরা জেলার বাইরে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার মানুষের।

ছোলা, ডিম ও ফিন্নি বাবুর্চি বাবু বলেন, প্রতিদিন ১৬ মণ দুধ দিয়ে ফিন্নি রান্না করা হয়। সিদ্ধ করা হয় ১০ হাজার ডিম। প্রতি বছরই আমি এখানে রান্নার কাজ করে থাকি। এ মাসটি আমরা রোজাদারদের খেদমত করি।

সিঙ্গাড়া বাবুর্চি মুক্তার হোসেন বলেন, আমি এখানে ৩২ বছর ধরে সিঙ্গাড়া বানাই। ১৫ জন একত্রে কাজ করি। আসরের নামাজের আগেই সিঙ্গাড়া প্রস্তুত শেষ করে ফেলি।

স্বেচ্ছাসেবক আরফুদ্দীন হোসেন বলেন, আমরা ছয়শ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছি এখানে। সকলেই নিজ উদ্যোগে এখানে এসেছি। বিকাল ৪টার পর থেকে বণ্টন কাজ শুরু করি। চেষ্টা করি যেন আগত কোনো রোজাদারের কোনোরূপ অসুবিধা না হয়।

কর্মকর্তা আনিছুজ্জামান খোকন বলেন, রমজানে প্রতি বছরই আমি এখানে সকল স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কাজ করে থাকি। আমি একজন মুসলমান হিসেবে বিশ্বাস করি, হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে ইফতারি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।