সাতক্ষীরায় করোনাকালীন স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা প্রকাশ করে তোপের মুখে জেলা প্রশাসন

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থপনার স্বীকৃতিস্বরুপ প্রকাশিত স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকাকে ঘিরে তোপের মুখে পড়েছে খোদ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন কতৃক প্রকাশিত একটি পুস্তিকায় এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত পুস্তিকায় দেখা যায়, করোনাকালীন সম্মুখ সারিতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে কাজ করেছে এমন ২৩ জন সেচ্ছাসেবকদের তথ্য সংযুক্ত করা আছে। যেখানে দুটি সংগঠন থেকে ১২ জনের নাম স্থান পেয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে মাত্র দুটি উপজেলার সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। বাকি ৫টি উপজেলার কোন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকায় রাখা হয়নি।

এদিকে, অভিযোগ উঠেছে সেচ্ছাসেবকদের তালিকায় থাকা অনেকেই করোনা কালীন বিভিন্ন এনজিও’র হয়ে কাজ করেছে। যার জন্য তারা এনজিও থেকে পারিশ্রমিক পেয়েছে।

অপরদিকে, জেলার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সংশ্লিষ্টরা এই তালিকাকে ‘বিতর্কিত’ আখ্যা দিয়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, তালিকায় যাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশদেরই উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেচ্ছাসেবক জানিয়েছেন, ২৩ জনের তালিকায় ১২ জনের নাম দিয়েছে একজন। যাদের অধিকাংশ কোন সামাজিক কিংবা মানবিক কাজের সাথে যুক্ত না। করোনাকালীন সময়ে যারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে থেকে সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর বাদে অন্য কোন উপজেলার সেচ্ছাসেবকদের নাম তালিকায় রাখা হয়নি।

মো. ফরিদ হাসান লিখেছেন, স্বেচ্ছাসেবকরা কখনও নাম কামাতে চাই না, তাই বলে অপমানও মেনে নেওয়া যায় না। এটা এক প্রকার অপমান তাদের জন্য যারা সত্যিকারে সামনে থেকে কাজ করে। অনেকে আবার টাকা দিয়ে সংগঠনের লাইসেন্স করে জন্ম সালকে সংগঠন প্রতিষ্ঠার সাল বানিয়ে স্বেচ্ছাসেবক সেজেছে, জীবনে তাদের কোন বিপর্যয়ের ৪র্থ কাতারেও দেখা যায় না। তবে খাতা কলম সব ঠিক থাকে। এটাও অপমানজনক ও দুঃখজনক।

সাকিবুল হাসান সাকিব নামের এক স্বেচ্ছাসেবক মন্তব্য করেছেন, এই লিস্টে যারা যুক্ত তাদের টাইমলাইনটা চেক করলেই পাওয়া যাবে আসল চেহারা।

এদিকে প্রকাশিত পুস্তিকায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নামের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে করোনা কালীন কাজ করা তালা উপজেলা নির্বাহি অফিসার ইকবাল হোসেনসহ অনেকেই।

এসব বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, তালিকায় অনেকের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে পুনরায় তালিকা নিয়ে আবারও প্রকাশ করবো।