সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড়

মাঝে এক বছর কমার পর, সুইস ব্যাংকে আবারও উচু হলো বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড়। ১২ মাসে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে প্রায় তেরোশ’ কোটি টাকা জমা করেছেন তারা। সবমিলিয়ে সুইস ব্যাংকগুলোতে এখন বাংলাদেশিদের আমানত ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়।

ধনীদের অর্থ, গোপনে গচ্ছিত রাখার জন্য বহুযুগের খ্যাতি সুইজারল্যান্ডের। প্রায় দু’শো বছর ধরে, ব্যাংকিং সেবার কেন্দ্র ইউরোপের দেশটি। ৮০ লাখ মানুষের দেশে, ব্যাংকের সংখ্যা ২৪৮টি। গ্রাহকের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে কঠোর তারা। ধারণা করা হয়, অবৈধ আয় ও কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা রাখা হয়, সুইস ব্যাংকে।

সুনির্দিষ্ট গ্রাহকের তথ্য না দিলেও, কয়েক বছর ধরে, দেশভিত্তিক আমানতের পরিমাণ প্রকাশ করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৮-র ডিসেম্বরে, সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ; দেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। ঠিক এক বছর আগে, এ অঙ্ক ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ ফ্রাঁ বা ৪ হাজার কোটি টাকা। মাত্র ১২ মাসে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে বারশ’ ৭৪ কোটি টাকা। এর আগে, কোনো বছর, একলাফে এতো বাড়েনি আমানত।

সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, কোন বাংলাদেশি, নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রেখে থাকলে, ওই টাকা এ হিসাবে অন্তর্ভূক্ত নয়। গচ্ছিত রাখা স্বর্ণ বা মুল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাব করা হয়নি এই প্রতিবেদনে।

এ পর্যন্ত যে হিসাব পাওয়া যায়, তাতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর, বাংলাদেশিদের আমানত বাড়ে সুইস ব্যাংকে। মাঝে ২০১৭ সালে বেশ খানিকটা কমলেও, আবার বেড়েছে তা। বাংলাদেশিদের টাকা বাড়লেও, সামগ্রিকভাবে ২০১৮ সালে আমানত কমেছে সুইস ব্যাংকগুলোতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সুইজারল্যান্ডে গোপনীয়তা কমায়, অনেক ধনী এখন অবৈধ টাকা জমা রাখার জন্য ঝুকছেন, লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, পানামা কিংবা বারমুডার মতো ট্যাক্স হ্যাভেনের দিকে।