সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ বিএনপির, পুলিশের অনুমতি নেয়া সংবিধান পরিপন্থী

নয়াপল্টনের পরিবর্তে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে বিএনপি।

সোমবার এ সমাবেশের কথা রয়েছে।

জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার রাতে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি নেওয়া সংবিধান পরিপন্থী: রিজভী

আগে থেকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে রাজনৈতিক সমাবেশ করতে হবে- এটাকে সংবিধান পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ পুলিশের অনুমতি নিয়ে হয়নি। নব্বইতে পুলিশের অনুমতি নিয়ে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন হয়নি। রাজনৈতিক সমাবেশে জন্য পুলিশের অনুমতি সংবিধান পরিপন্থী। রাজনৈতিক দলের কাজ হচ্ছে পুলিশকে শুধু অবহিত করা, আর পুলিশের দায়িত্ব নিরাপত্তা দেয়া।

রবিবার রাতে নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে রামদা-হকিস্টিক নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলো। যা সব গণমাধ্যমে ছবিসহ প্রকাশ পেয়েছে। তাদের গ্রেফতার না করে উল্টো যাদের ওপর হামলা করা হলো তাদেরকেই আসামি করে মামলা করলো পুলিশ।

তিনি বলেন, বিএনপির এক দফার আন্দোলনে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও শতকরা ৮০ ভাগের বেশি জনগণ সমর্থন জানিয়েছে। আজ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ‘স্টেপ ডাউন শেখ হাসিনা’ ফেসবুক ও টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। ‘স্টেপ ডাউন শেখ হাসিনা’ লিখে পোষ্ট দিয়েছেন বিশ্বে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এবং বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী।

নির্বাচনের বিষয়ে রিজভী বলেন, আজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা এবং ডিসেম্বরে নির্বাচন। এই স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। ভোটারবিহীন তামাশার নির্বাচন করার অপচেষ্টা হচ্ছে, জনগণ তা হতে দেবে না।

বিএনপির এই নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে বলেন, সরকার না কি মানবতা দেখিয়েছে! এক বছরে রাজপথে ১৭ জনকে হত্যা করেছেন, তখন কোথায় ছিলো মানবতা? অসংখ্য নেতাকর্মীকে পঙ্গু বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথায় ছিলো মানবতা? গতকাল শনিবার বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে পুরো রাজধানীকে রক্তে রঞ্জিত করেছেন, কোন মানবতা থেকে?

রিজভী বলেন, গতকালের সরকারী বাহিনীর আক্রমণের খবর বিশ্বগণমাধ্যমে প্রচারিত হলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর কৌশল নেয় আওয়ামী সরকার। এখন বিএনপির বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার জন্য নানা ফন্দি করলেও জনগণ এসব আমলে নেয়নি।

রাজধানীতে আহত এবং গ্রেফতার নেতাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের মুক্তি দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি জানান, গতকাল ও আজকে ৫৪৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে ১১টি মামলা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ২৫০ নেতাকর্মীকে, আহত হয়েছেন ৬৫০ জনের অধিক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।