নেত্রকোনায় পলো দিয়ে মাছ শিকারে গিয়ে সংঘর্ষ, নিখোঁজের দুই দিন পর তিন লাশ উদ্ধার


নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে পলো দিয়ে মাছ শিকারে গিয়ে সংঘর্ঘে নিখোঁজের দুই দিন পর ধনু নদী থেকে তিন লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও জনতা। সোমবার বিকালে এ সব লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত লাশের মধ্যে রয়েছে মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে রোকন মিয়া , আটপাড়া উপজেলার রূপছন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে শহীদ মিয়া (৫৫), কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (৩০) কে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ দিকে মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের ইয়াছিন মিয়াসহ আরও অনেকে নিখোঁচ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিহত হৃদয়ে ভাই লিটন মিয়া জানান, আমার ভাইয়ের সাথে আমিও পলো দিয়ে মাছ ধরতে আসছিলাম। ওই এলাকার লোকজন আমাকে ও আমার ভাইকে মেরে পানিতে ফেলে দেয়। আমি পানি থেকে সাতাঁর কেটে উঠতে পারলেও আমার ভাই উঠতে পারেনি। আমি এর বিচার চাই।
ময়মনসিংহের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী ইউনিটের টিম লিডার নূরুল আলম খান জানান, গত শনিবার ধনু নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরতে আসা কিছু লোকজন নিখোঁজ রয়েছে। এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে আমরা ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম ধনু নদীতে আসি। পরে নদীতে খোঁজাখুজির পর নাউটানা নামক স্থান থেকে শহীদ ও হৃদয় মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
অপর দিকে রোকন মিয়ার লাশ ভেসে উঠলে জনগণ তার লাশ উদ্ধার করে।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, শনিবার রসুলপুর গ্রামের লোকজনের সাথে পলো দিয়ে মাছ মারতে আসা লোকজন ধনু নদী পাড়াপাড়ের সময় একটি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কয়েকজন নিখোঁজ ছিল। এর মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশ ময়না তদন্ত করা হবে। পরিবারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার পূর্বঘোষিত অনুযায়ী খালিয়াজুরীতে ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরিপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার হাজার হাজার লোকজন সমাবেত হয়ে হাওড়ে লোকজন মাছ মারতে আসে।
এ সময় জমায়েত হয় হাজারো লোকজন। পরে মাছ শিকারীরা রসূলপুর ফেরিঘাটের পাশে তাদের পরিবহণের শতাধিক পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, হেনট্রলি, মোটরসাইকেল রেখে ধনু নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ফেরিঘাটের লোকজনের সঙ্গে মাছ শিকারীদের তর্কবির্তকের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধেঁ এতে স্থানীয় লোকজন অংশ নিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ সময় উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক লোক আহত হয় এবং বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়। পরে জনতা মাছ শিকারীদের পরিবহণের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গাড়িতে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন