পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হাজিরা খাতায় প্রক্সি স্বাক্ষর দেওয়া

প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা শোকজের জবাব দিয়েছেন

বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় প্রক্সি স্বাক্ষর (জাল স্বাক্ষর) দেওয়ার ঘটনায় মঠবাড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসের দেওয়া কারন দর্শানো নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন ৩৩ নং ওয়াহেদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) আওয়ার নিউজের মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন।

গত (৩ নভেম্বর) সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ গোলাম হায়দার বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে অনুপস্থিত পান। এ সময় বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতকালীন তার স্বাক্ষর লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করে আসেন ওই ক্লাস্টার অফিসার। গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি টের পাওয়ার পর ৮ নভেম্বর প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লাকে ৭ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে শোকজ করা হয়।তবে প্রধান শিক্ষিকা প্রভাবশালী হওয়ায় জাল স্বাক্ষর এবং লাল কালির দাগে ফ্লুট দিয়ে মুছে ফেলেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।

১৬ নভেম্বর প্রাপ্ত শোকজ জবাবের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সহকারী অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের জ্ঞাতার্থে ২১ নভেম্বর প্রতিবেদন প্রেরন করেন।২৩ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রতিবেদনটি জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট অগ্রগামী করেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কমলেশ চন্দ্র গাছি জানান,প্রতিবেদন পেয়েছি। প্রতিবেদনটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের নিকট অগ্রগামী করা হয়েছে।তিনি আরও জানান,কোন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার উপ-পরিচালকের আছে। আমরা শুধু শোকজ এবং প্রতিবেদন দিয়ে থাকি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে বছরের পর বছর ধরে কোন ম্যানেজিং কমিটি নেই।কয়েক বছর এডহক কমিটি দিয়ে চললেও বর্তমানে তাও নেই।এডহক কমিটি নবায়ন করা হবে কিনা অথবা নিয়মিত কমিটির জন্য তফসিল দেওয়া হবে কিনা তাও বলতে পারেন না উপজেলা শিক্ষা অফিস।প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কমিটি ছাড়া মনগড়া নিয়মে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।বিদ্যালয়ের জমির পরিমান জানেন না প্রধান শিক্ষিকা।এমনকি জমির কোন কাগজপত্রও সংরক্ষিত নেই বিদ্যালয়ে।দৃশ্যমান নেই সরকারী বরাদ্দের উন্নয়নমূলক কাজ।ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে বরাদ্দের সিংহভাগ টাকাই আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে রুনা লায়লার বিরুদ্ধে।এ নিয়েও সম্প্রতী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ তদন্তের জন্য ভান্ডারিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কমলেশ চন্দ্র গাছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারী হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন,প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে অন্য সংস্থা বা অফিস দিয়ে তদন্ত করানো হবে।অন্যায় বা অনিয়ম করে কেউ পার পাবে না।