অনুমতি ছাড়া তাবলিগে যাওয়ায় তাহিরপুরে স্ত্রীকে হত্যা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অনুমতি ছাড়া তাবলিগ জামাতে যাওয়ায় স্বামী কাঁচি দিয়ে পেট ও হাতে উপর্যুপরি আঘাত করে সরুফা বেগম নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করেছে। আঘাতের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। লাশ ভোরেই বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় গোপনে দাফনের জন্য। সরুফা উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের কলাগাঁও পূর্ব পাড়া উত্তর হাঁটির কাপড় ব্যবসায়ী ফারুক মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক স্বামী ফারুক মিয়াকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানায়, উত্তর হাঁটির হাসিম মুন্সীর ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে করেন পাশের চারাগাঁও মাইজহাঁটির আবদুল মালেকের মেয়ে সরুফা খাতুনকে। বর্তমানে তাদের দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে।

অনুমতি ছাড়া অন্য নারীদের সঙ্গে তাবলিগের দাওয়াতি কাজে যাওয়ায় ও সময়মতো কাপড় না কাটার জের ধেরে বৃহস্পতিবার বিকালে ফারুক কাঁচি দিয়ে সরুফার তলপেটে ও বাম হাতে একাধিক আঘাত করেন। তাকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এতে অবস্থার উন্নতি না হলে শুক্রবার বিকালে উপজেলার বাদাঘাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক দম্পতির কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রাতভর চিকিৎসার একপর্যায়ে শনিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। ভোরেই গোপনে লাশ বাবা আবদুল মালেকের চারাগাঁও মাইজহাঁটির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় রফাদফার মাধ্যমে দাফনের জন্য।

পেটের ব্যথায় সরুফার মৃত্যু হয়েছে এমন কথা ছড়িয়ে দিয়ে দাফনের আয়োজন করা হয়। সকাল ৮টার দিকে সরুফার খুনের বিষয়টি চাউর হতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ নিততের স্বামী ফারুক মিয়াকে গ্রেফতার করে।

সরুফার মেয়ে প্রতিবেশীদের জানিয়েছে, তার বাবা ফারুক মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে কাঁচি দিয়ে তাদের সামনেই মায়ের তলপেটে ও হাতে আঘাত করেন। নিহতের সন্তানদের দাবি- লুকোচুরি না করে সময়মতো সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করালে তাদের মায়ের মৃত্যু হতো না। উপজেলার বাদাঘাটের নারী পল্লী চিকিৎসক সেলিনা বেগম শনিবার সকালে সরুফাকে নিজ বাসায় রেখে রাতে চিকিৎসা দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বাম হাতে ৭টি সেলাই দিয়েছি, আর তলপেটে সামান্য কাঁচির আঘাত ছিল তা দেখেছি। রোগীর প্রস্রাব বন্ধ ছিল, প্রস্রাব করার ব্যবস্থার পর ব্যথার জন্য ইনজেশন পুশ করেছিলাম।