অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে জিম্মী মিঠাপুকুর 

অবৈধ বালু  ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে জিম্মি যেন পুরো মিঠাপুকুর উপজেলাই।বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে ধ্বংস হচ্ছে রাস্তাঘাট ও বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি।বালু ব্যবসায়ীদের সূত্র বলছে এমপির সুপারিশে উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি নিয়েই চলছে তাদের বালু উত্তোলনের এই মহাযজ্ঞ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার কাফ্রিখাল ফেডারেশন বাজার সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ একমাস থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় বাটুল গং।নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয়রা জানায় এমপির লোক বাটুল।বালু তোলার আগেই থানা,ইউএনও অফিস,এসিল্যান্ড অফিস ম্যানেজ করেই চলছে তার এই অবৈধ বালু উত্তোলন।প্রকাশ্যে এই অবৈধ বালু উত্তোলন চললেও প্রশাসন জেনেও অজানার ভান করে আছে।ক্ষতির স্বীকার হলেও বাটুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার সাহস নেই কারো।একই ইউনিয়নের কোমরগঞ্জের উঁচা মসজিদের পূর্ব পাশে রাস্তা সংলগ্ন মহাদিপুর সরকারটারি এলাকায় যাদবপুরের সোহেল  পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনেের ফলে  ভাঙ্গনের মুখে পাশ্ববর্তী কৃষি জমি।
কাফ্রিখাল ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী ভাংনী ইউনিয়নের চাঁদপুরে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ ৬ মাসের আংগুর গংদের অবৈধ বালু ব্যবসায় চাঁদপুর ঘাঘট নদী থেকে ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ ১ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি বালুর কাঁকড়ার দৌরাত্মে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।বালু উত্তোলনে  ঘাঘটে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি শিরোনামে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের শীতল সতর্কতায় এই জায়গাটিতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন সাময়িক বন্ধ হলেও বালু পরিবহনের অবৈধ কাঁকড়ার দৌরাত্মে চলাচলের অনুপযোগী রাস্তার দরুন প্রতিনিয়ত ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাচলরত হাজারো মানুষ।রাস্তা সংরক্ষণে সরকারি আইন থাকলেও তার বাস্তবায়ন নেই এখানে।নতুন করে এই স্থানের বালুর পয়েন্টের অপজিটে ভেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভাংনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,অবৈধ বালু উত্তোলন শুরু করার কিছুদিন পরেই আমি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছিলাম।রাস্তা নষ্টের জন্য তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছি।বালু ব্যবসায়ীরা রাস্তায় রাবিস দিয়ে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।স্থানীয়রা বলছে রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি লোক দেখানো।
এছাড়াও উপজেলার বৈরাতী নানকর রসুলপুরে নারায়ন মাস্টারের কৃষি জমি থেকে ড্রেজার  মেশিন দিয়ে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন।নারায়ন মাস্টার বলেন,এমপি,ইউএনও,পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র সবাইকে অবগত করেই আমি বালু উত্তোলন করেছি।আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন।
রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর সিংগিরডোগায় দীর্ঘ এক মাস থেকে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছে এমপির লোক বলে পরিচিত স্থানীয় বাবলু গং।ইতিমধ্যে একই স্থানে  বালু উত্তোলনের কারণে মামলাও হয়েছিলো।অব্যাহত বালু পরিবহনে একটি ব্রীজও ভেঙ্গে ফেলেছে এই বালু ব্যবসায়ী।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান,মিঠাপুকুর উপজেলায় বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি।যদি কোন অবৈধ বালু ব্যবসায়ী উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে বালু উত্তোলন করে থাকে এ ব্যাপারে আপনারা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের এমপি জাকির হোসেন সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার পিএস আলমগীর হোসেন বলেন এমপি স্যার এখন ব্যস্ত আছে।একটু পর মিনিস্টারিতে যাবো।আপনি পরে কথা বলিয়েন।