অভিনয়ের কথা স্বীকার করলেন নেইমার! (ভিডিও)

তার কাঁধে চড়েই বিশ্বকাপে হেক্সা জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ব্রাজিল। কিন্তু কোয়ার্টারে গিয়ে বেলজিয়ামের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। দল ব্যর্থ হলেও মাঠের নেইমার অবশ্য ছিলেন দুর্দান্ত। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে যতটা না আলোচনায় এসেছেন, তার চেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের অভিনয় নিয়ে।

মাঠে প্রতিপক্ষের ছোঁয়া লাগতে না লাগতেই পড়ে যাচ্ছেন, ফাউল আদায় করতে গড়াগড়ি দিচ্ছেন-এমন হাজারও অভিযোগে নেইমারের নামের পাশে জুড়ে গিয়েছিল ‘অভিনেতা’ তকমা। তার মাঠের কান্ড নিয়ে বিশ্বজুড়েই আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়েছে ট্রল।

নেইমার কি সবসময় মাঠে অভিনয়ই করেছেন? পরিসংখ্যান কিন্তু বলছে, রাশিয়া বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছেন পিএসজি তারকা। তবে মাঠে যে একেবারে তিনি ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ ছিলেন, এমনও নয়। বিশ্বকাপের অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবার পর ব্রাজিলিয়ান তারকা নিজেই স্বীকার করলেন, ফাউলের সময় প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশিই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তিনি।

ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় অবশ্য কোনো সাক্ষাতকারে এমন স্বীকারোক্তি দেননি। মানুষের মনে জমে থাকা অনেক প্রশ্নের জবাব তিনি দিয়েছেন স্পন্সর ‘জিলেট’-এর একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে, যে বিজ্ঞাপনে নেইমার নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন, শুদ্ধ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে ফেরার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন।

বিজ্ঞাপনে নেইমার তার অভিনয় নিয়ে বিতর্কের জবাব দিতে বলেছেন, ‘আপনারা হয়তো ভাবতে পারেন, আমি অতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। মাঝেমধ্যে আমি সেটা করেছি। তবে সত্যটা হলো, মাঠে আমাকে আঘাত পেতে হয়েছে। আমি জানতাম না, কিভাবে এর থেকে বাঁচতে হবে।’

নেইমারকে উদ্ধত বলা হয়, বলা হয় তিনি বখাটে স্বভাবের। এই সমালোচনা নিয়েও ব্রাজিল তারকা কথা বলেছেন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। যেখানে তিনি বলেন, ‘যখন আমি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাই না, তার কারণ এই নয় যে, আমি শুধু জিততে পছন্দ করি। তার কারণ, আমি আপনাদের হতাশ করতে শিখিনি। যখন আমাকে অভদ্র মনে হয়, তার কারণ এটা নয় যে, আমি নষ্ট ছেলে। কারণ হলো, আমি জানি না কিভাবে হতাশার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়।’

সবার সমালোচনা মেনে নিয়ে নিজেকে নতুন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারও করেছেন নেইমার। বলেছেন, ‘আপনাদের মনে হতে পারে, আমি খুব বেশি পড়ে যাচ্ছি। তবে বাস্তবতা হলো, আমি ভেঙে খান খান হয়েছি। এটা অপারেশন হওয়া অ্যাঙ্কেল মাড়িয়ে দেয়ার চেয়েও বেশি কষ্টকর। আমি আপনাদের সমালোচনা মেনে নিতে সময় নিয়েছি। সময় নিয়েছি নিজেকে আয়নায় দেখতে এবং নতুন একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে। আমি পড়ে গিয়েছিলাম, তবে তারাই উঠতে পারে, যারা পড়ে যায়।

আপনারা আমার দিকে পাথর ছুঁড়ে মারতে পারেন অথবা সেটা বাইরে ছুঁড়ে আমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারেন। কেননা যখন আমি উঠে দাঁড়াই, পুরো দেশ আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ায়।’