অ্যাডমিরাল পদে পদোন্নতি নৌবাহিনী প্রধান নাজমুলের

নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ‘অ্যাডমিরাল’ পদে পদোন্নতি লাভ করেছেন।

এ উপলক্ষ্যে রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নৌবাহিনী প্রধানকে অ্যাডমিরাল র‌্যাংক পরিয়ে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ২৪ জুলাই নৌবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।

নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই কমিশন লাভ করেন। চাকরি জীবনে তিনি বিভিন্ন স্টাফ, ইন্সট্রাকশনাল এবং কমান্ড দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি নৌসদরে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স), সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পারসোনেল), পরিচালক নৌ অপারেশন্স ও নৌ গোয়েন্দা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে অসামরিক-সামরিক সংযোগ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধজাহাজ বানৌজা ওমর ফারুকসহ চারটি যুদ্ধজাহাজের অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির কমান্ড্যান্ট এবং নেভাল এভিয়েশন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর স্পেশাল ফোর্স (সোয়াডস) কমান্ড করেন। কমান্ডার বিএন ফ্লিট এবং কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি ভাষানচরে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিকদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সুচারুরূপে চলমান রাখেন। তাছাড়া দুর্গম উপকূলীয় এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

তিনি ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন। আইএসপিআর।

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সামরিক প্রস্তুতির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর : বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, বরং শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী রোববার নৌবাহিনী প্রধানের সচিবালয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী সিলেকশন বোর্ড-২০২৩-এ ভাষণ দেওয়ার সময় দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির স্বার্থে বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু আমরা জাতির পিতার দেওয়া নীতি অনুসরণ করছি, তাই আমরা সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা।

দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের প্রচেষ্টার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার সফলভাবে জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন করছে। জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হব না। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। তার সরকার সফলভাবে এ ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।

শেখ হাসিনা নৈতিকতা, ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে জ্ঞান, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দায়িত্ববোধ ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য বাছাইয়ে বিচক্ষণ ও নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করার জন্য নির্বাচন বোর্ডকে নির্দেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, নেতৃত্বের পদের জন্য আপনাদের এমন কর্মকর্তা বেছে নেওয়া উচিত যারা যে কোনো সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারদর্শী এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে তাদের বিচক্ষণতা প্রয়োগের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম।

প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, প্রতিটি দুর্যোগে তারা সব সময় জনগণের পাশে থাকে। তিনি বলেন, আপনারা জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তারা সফলভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং বিশ্বমঞ্চে এর মর্যাদা তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, আমরা অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করেছি। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের একটি উজ্জ্বল ভাবমূর্তিও তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে আবির্ভূত হতে সক্ষম হয়েছে।