আবাসন খাতের উন্নয়নে প্রয়োজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা : গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী

গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেছেন, আবাসন খাতের উন্নয়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা এবং তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আরো বিপুল সংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব বসতি দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী সব কথা বলেন। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য‘বৈষম্য হ্রাসের অঙ্গীকার করি, সবার জন্য টেকসই নগর গড়ি’।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতা, পুঁজিবাদী সভ্যতা এবং সম্পদের অসম বণ্টন সমাজে প্রতিনিয়ত বৈষম্য বৃদ্ধি করছে। এতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি এবং বাসস্থান সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। ফলে আবাসন ব্যবস্থায় নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

শরীফ আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলায় আশ্রয়হীন ও ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসন শুরু করেন। রাজধানী ঢাকার বাউনিয়াবাদে তিনি বাস্তুহারাদের বাসস্থানের জন্য ভূমি বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা নিহত হবার পর এই কর্মসূচি স্থবির হয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি সবার জন্য মানসম্মত আবাসন নিশ্চিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় স্বল্প, মাধ্যম ও নিম্ন‌ আয়ের মানুষের জন্য বিপুল সংখ্যক প্লট উন্নয়ন ও ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। রাজধানী ঢাকায় বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। টঙ্গীর দত্তপাড়া এবং ঢাকার মিরপুরে এ ধরনের আরো বড় দু’টি প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। কেরাণীগঞ্জের ঝিলমিল রেসিডেন্সিয়াল পার্কে পিপিপিরভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে ১৩ হাজার ৭২০টি ফ্ল্যাট। সরকারি কর্মকর্তাদের বসবাসের জন্য ঢাকার মতিঝিল, আজিমপুর, মালিবাগ, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি শহরের পরিকল্পিত উন্নয়নের লক্ষ্যে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন কৃষি জমি রক্ষা পাবে অন্যদিকে সবার মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রতিমন্ত্রী বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।