ইংল্যান্ডকে হারাবে বাংলাদেশ : হাবিবুল বাশার

আগামীকাল আবারও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছে টাইগাররা। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে থেকে ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। অ্যাডিলেড ওভালে ইংলিশদের হারিয়ে টাইগারদের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার দৃশ্যটা এখনও টাটকা হাবিবুল বাশারের মনে। আইসিসির আরও একটি টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের ওই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কি হতে পারে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে? হাবিবুল বলছেন ‘সম্ভব’। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে ‘আইসিসি ওয়েবসাইট-এ লেখা কলামে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক শুনিয়েছেন ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের আশার কথা।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে বাংলাদেশ জিতেছে নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ইংল্যান্ড আবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। সেই ইংলিশদের বিপক্ষে শুরুতেই কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছে মাশরাফিদের। যদিও এই ম্যাচটিকেই সামনে এগোনো সিঁড়ি হিসেবে দেখছেন হাবিবুল’ ‘প্রথম ম্যাচ সবসময় গুরুত্বপূর্ণ থাকে, বাংলাদেশের বেলার সেটা আরও বেশি। এই গ্রুপে ইংল্যান্ড ছাড়াও খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বাংলাদেশের সামনে একটাই পথ খোলা আছে, আর সেটা হলো ভালো শুরু। শুরুটা ভালো না হলে সেমিফাইনালে ওঠাটা কঠিন হয়ে যাবে। ’

ইংল্যান্ড খেলবে ঘরের মাঠে। স্বাভাবিকভাবেই দর্শক সমর্থন থাকবে তাদের বেশি। যদিও বাংলাদেশের সমর্থক কম থাকবে না বলে মনে করেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘ইতিমধ্যে প্রথম ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি শেষ। দুদলেরই প্রচুর সমর্থক থাকবে মাঠে। ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠ হলেও ওভালে দলকে সমর্থন দেওয়ার জন্য প্রচুর বাংলাদেশি থাকবেন। আমার মনে হয় না বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা বুঝতে পারবেন তারা দেশের বাইরে কোথাও খেলছে। ’

ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ার্ম আপ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হওয়ায় লজ্জায় পড়ে সাকিবরা। মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় পিচ থেকে ভারতীয় পেসাররা বাড়তি সুবিধা পাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। আবহাওয়ার দিকেও তাই নজর রাখছেন হাবিবুল, ‘আশা করব লন্ডনের দিনটা হবে রৌদ্রজ্জ্বল, আর পিচটা হবে দারুণ। কিন্তু আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন হলে উপমহাদেশীয় দলগুলোর জন্য ইংল্যান্ডে ব্যাটিং করাটা কঠিন হয়ে পড়ে, উইকেট থেকে পেসাররা বাড়তি সুইং সুবিধা পায়। নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ দল আশা করবে আবাহওয়াটা যেন তাদের জন্য শুভ হয়। ’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ইংলিশদের ফেভারিট মানছেন হাবিুবলও। এরপরও ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ স্মৃতিটা মনের কোণে উঁকি মারছে তার। আর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত জয়টা অ্যাডিলেড ওভালে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। আবার কি ইংল্যান্ডকে হারানো যাবে? আমার মনে হয় যাবে। ইংল্যান্ড এখন অনেক ভালো এবং আলাদা একটা দল, এরপরও আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। ’

দল হিসেবে ইংল্যান্ডের চেয়ে যে বাংলাদেশ কোনও অংশে পিছিয়ে নেই, সেটাও ধরে ধরে বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে ৫০ টেস্ট খেলা সাবেক এই ব্যাটসম্যান। হাবিবুলের যুক্তি, ‘(ইংলিশ) ওপেনার জেসন রয় ও অ্যালেক্স হেলস অভিজ্ঞ ও দারুণ ক্রিকেট খেলছেন, যদিও বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার খুব বেশি পিছিয়ে নেই তাদের চেয়ে। তামিম এখন অনেক পরিণত, আর সৌম্য অনেকটা রয়ের মতোই কার্যকর। ’ সঙ্গে আরও যোগ করলেন, ‘ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারটা ভীষণ শক্তিশালী; আছেন জো রুট, এউইন মরগান ও জস বাটলারের মতো ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশও তাদের জবাবটা দিতে পারে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে। ’

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর বাংলাদেশের উল্লাস
ইংল্যান্ডের পেস বোলিং বিভাগকে এগিয়ে রাখছেন হাবিবুল। তবে তার দুশ্চিন্তাটা সবচেয়ে বেশি বেন স্টোকসকে নিয়ে, ‘পেস বোলিংয়ে ইংল্যান্ড দুর্দান্ত, তবে তারা সবচেয়ে বড় সুবিধাটা পাবে বেন স্টোকসের কাছ থেকে। সত্যিকারের এক অলরাউন্ডার, যিনি ব্যাট হাতে কিংবা বল হাতে একাই জিতিয়ে দিতে পারেন ম্যাচ। ’

সবকিছু মিলিয়ে ইংল্যান্ডকে ফেভারিট মানলেও দিন শেষে বাংলাদেশের জয়ের জন্যই অপেক্ষায় থাকবেন হাবিবুল, ‘ফেভারিট হয়েই টুর্নামেন্ট শুরু করবে ইংল্যান্ড, যদিও ক্রিকেট সবসময় পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষকদের ভুল প্রমাণ করে। আমি নিশ্চিত দুর্দান্ত একটা ম্যাচ দেখতে যাচ্ছি আমরা। আর আশা করছি শেষের হাসিটা থাকবে বাংলাদেশের মুখে। ’ হাবিবুলের মতো এই প্রত্যাশায় থাকবেন বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষও।