ইসলামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান নেই: এনামুল হক শামীম

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল শামীম বলেছেন, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি ঈমানদার মুসলমান। তিনি কখনও ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি। তারই যোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের উন্নয়ন করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উন্নতি করেছেন। ভোট এলেই একটি গোষ্ঠি হীন উদ্দেশে ধর্মকে ব্যবহার করে। দেশের আলেম সমাজকে এ ব্যাপারে সজাগ ও সর্তক থাকতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল শামীম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, একটি নতুন মানচিত্রের অমর রূপকার। বাংলাদেশকে সব ধর্মের সব মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। বঙ্গবন্ধুর স্বল্পকালীন শাসনামলে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণার্থে গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামোগত পদক্ষেপ যেমন ছিল, তেমনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের বিষয়াদি বিবেচনায় রেখে তিনি ইসলামের প্রচার-প্রসারে গ্রহণ করেছিলেন বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকরী নানা ব্যবস্থা।

উপমন্ত্রী শামীম বলেন,তিনি যেমন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, তেমনি বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামের প্রচার-প্রসারের স্থপতিও তিনিই। এ দুটি অনন্য সাধারণ অনুষঙ্গ বঙ্গবন্ধুর জীবনকে দান করেছে উজ্জ্বল মহিমা। ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা, প্রচার-প্রসার ও এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সামগ্রিক জীবনকে মহান ধর্ম ইসলামের কল্যাণময় স্রোতধারায় সঞ্জীবিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান এক অধ্যাদেশ জারি করে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ‘বায়তুল মোকাররম সোসাইটি’ এবং ‘ইসলামিক একাডেমি’ নামক তৎকালীন দুটি সংস্থার বিলোপ সাধন করে এ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়।

তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলেম সমাজের জন্য কাজ করেছেন। ইসলাম প্রচার এ প্রসারে নানমুখী উদ্যোগ নিয়েছেন। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ; দেশের ৩১টি কামিল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করা; যোগ্য আলেমদের ফতোয়া প্রদানে আদালতের ঐতিহাসিক রায়; জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও সম্প্রসারণ, সুউচ্চ মিনার নির্মাণ, সারাদেশে ৫০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সেন্টার নির্মাণ। বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও রাজকীয় সৌদি আরব সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর; হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার; জেদ্দা হজ টার্মিনালে ‘বাংলাদেশ প্লাজা’ স্থাপন; আশকোনা হজক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি; রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রী প্রেরণ; হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি সরকারের স্বীকৃতি; মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে আলেম-ওলামাদের কর্মসংস্থান ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধি; শিশু ও গণশিক্ষা এবং কোরআন শিক্ষা কার্যক্রমে মাহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ডিজিটালে রূপান্তর; জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে ইসলাম শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বনেতাদের কাছে বাংলাদেশের আলেম-ওলামাদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা; মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান।

তিনি আরও বলেন, ধর্মকে কেউ যেন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সবাই সজাগ থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নদভী এমপির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, প্রকৌশলী ড. রশিদ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, রিজিয়া সুলতানা নদভী, অধ্যাপক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।